কক্সবাজারে নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার আশিকুল

কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার মূল হোতা ও প্রধান আসামি মো. আশিকুল ইসলামকে (২৯) র‍্যাব মাদারীপুর থেকে গ্রেফতার করেছে। আজ সোমবার সকালে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, ধর্ষণকাণ্ডের ২ দিন পর বেশভূষা পরিবর্তন করে কক্সবাজার থেকে ঢাকা হয়ে পটুয়াখালী যাওয়ার পথে মাদারীপুরের মোস্তাফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয় আশিকুলকে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-৮ ও ১৫ অভিযান চালিয়ে রবিবার দিবাগত রাতে মাদারীপুরের মোস্তাফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আশিকুলকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশিকুল ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছে।

র‍্যাব জানায়, গ্রেফতার আশিকুল কক্সবাজারের পর্যটক এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের মূল হোতা। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ৩০-৩৫ জন। তিনি ২০১২ সাল থেকে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও ২০১৪ সালে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হন তিনি। আশিকুলের নামে ইতোমধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র, মাদক, নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজিসহ ১২টি মামলা চলমান রয়েছে। ইতোপূর্বে সে ৫ বার পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয় এবং দীর্ঘদিন কারাভোগ করে।

আশিকুলের চক্র পর্যটন এলাকায় চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, জিম্মি, চাঁদাবাজি, জবরদখল, ডাকাতি ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। হোটেলে ম্যানেজারদের যোগসাজশে ট্যুরিস্টদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেল করত তারা।

আলোচিত ধর্ষণকাণ্ড সম্পর্কে আশিকুল জানায়, তারা ভিকটিম ও তার পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে লাবণি বিচ এলাকার রাস্তা থেকে ভুক্তভোগীকে সিএনজি চালিত অটো রিকশায় তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ধর্ষণ ও জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে আটক করে রেখে ওই নারীর স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর ভিকটিমকে হোটেলে আটকে রেখে বের হয়ে যায়। বিষয়টি জানাজানি হলে আশিকুল আত্মগোপনে চলে যায়।

ধর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে র‍্যাব কমান্ডার বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারী স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজারের একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। তাদের সঙ্গে ৮ মাস বয়সের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। শিশুটির জন্মগতভাবে হার্টে ছিদ্র থাকায় তার চিকিৎসায় ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। এ অর্থ সংকুলানের আশায় কক্সবাজারে অবস্থান করছিল পরিবারটি। তারা বিত্তবান পর্যটকদের নিকট হতে অর্থ সাহায্য চাইত।

Scroll to Top