৩ বছর পর পুলিশের সহায়তায় মাকে ফিরে পেল ছেলে

মা যেন থেকেও ছিলো না। তিন বছর আগে ঢাকা থেকে হারিয়ে যান ফিরোজা বেগম (৫৫) নামের এক নারী। রাজধানী খিলগাঁওয়ের নন্দিপাড়ার বাসা থেকে হারিয়ে যাওয়ার পর স্বামী আর ছেলেরা মিলে তাকে হন্য হয়ে খুঁজেছেন সম্ভাব্য সকল স্থানে। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ফিরোজাকে ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুলিশের সহায়তায় ফিরোজা বেগম ফিরেছেন তার পরিবারে।

আজ শনিবার সিলেট জেলা পুলিশ তার ছেলে মো. সুমন মিয়ার কাছে হস্তান্তর করেছে ফিরোজা বেগমকে। হারানো মাকে ফিরে পেয়ে আনন্দঅশ্রু গড়ালো সুমনের চোখে। ফিরোজা বেগমের চোখেমুখেও ছিল স্বজনের কাছে ফেরার আনন্দ।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুর রহমান জানান, বরগুনা জেলা সদরের কালিরতভোগ গ্রামের চান মিয়ার স্ত্রী ফিরোজা বেগম। ২০১৭ সালে ঢাকার খিলগাঁওয়ে ছেলে মো. সুমন মিয়ার বাসা থেকে বের হয়ে হারিয়ে যান তিনি। এরপর স্বামী, তিন ছেলে আর দুই মেয়ে মিলে তার অনেক খোজাখুঁজি করেছেন। কিন্তু তার সন্ধান পাননি।

তিনি জানান, এরপর ঘুরতে ঘুরতে মানসিক ভারসাম্যহীন ফিরোজা বেগম চলে আসেন সিলেটে। কোম্পানীগঞ্জ থানার শাহ আরেফিন টিলা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তিনি চলে যান ভারত সীমান্তে। গত ৩০ এপ্রিল বিএসএফ তাকে আটক করে। তার কথাবার্তায় বাংলাদেশি নাগরিক ও ভারসাম্যহীন বুঝতে পেরে বিএসএফ তাকে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করে। কিন্তু ফিরোজা বেগমের কথা বুঝতে না পেরে তার ঠিকানা সনাক্ত করতে পারেনি বিজিবি। পরে তাকে নিয়ে আসা হয় কোম্পানীগঞ্জ থানায়।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুর রহমান জানান, খবর পেয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন ফিরোজা বেগমের পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা চালান। ফিরোজার অস্পষ্ট কথায় পুলিশ বুঝতে পাওে তার বাড়ি বরগুনা জেলায়। এরপর বরগুনা সদর থানা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে তার পরিচয় সনাক্ত করা হয়। মাকে পাওয়ার খবর পেয়ে আজ শনিবার ছেলে মো. সুমন মিয়া ছুটে আসেন সিলেটে। কোম্পানীগঞ্জ থানায় মাকে দেখতে পেয়ে জড়িয়ে ধরেন। তিনবছর পর মাকে ফিরে পেয়ে অশ্রু গড়ায় সুমনের চোখে। ছেলেকে পেয়ে মায়ের মুখে খেলে খুশির ঝিলিক। মানসিক ভারসাম্যহীন মাকে ফিরে পেতে সহায়তা করায় সিলেট জেলা পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় সুমন।