কোটি টাকার আধুনিক সড়কবাতি ধূলিঝড়েই মুখ থুবড়ে পড়লো

রাজশাহীতে প্রজাপতির ডানা হিসেবে পরিচিত আধুনিক সড়কবাতির খুঁটি সামান্য ধূলিঝড়েই উপড়ে পড়েছে। মহানগরীর সড়ক ডিভাইডারে কিছুদিন আগে উদ্বোধন করা আধুনিক এসব সড়কবাতির অন্তত ৮৬টি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪০টি খুঁটি মাটি স্পর্শ করেছে আর ৪৬টি খুঁটি হেলে পড়েছে। ‘হ্যারো ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) বিদ্যুৎ বিভাগ কাজটি বাস্তবায়ন করে। কাজটিতে ব্যয় হয় পাঁচ কোটি ২২ লাখ টাকা।

গতকাল রোববার বিকেলে ৬৫ কিলোমিটার গতি বেগের ধূলিঝড়ে নগরীর বিলশিমলা-কাশিয়াডাঙ্গা সড়কে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও নগরীতে ধূলিঝড়ের কারণে বেলা আড়াইটার পর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হলেও অধিকাংশ এলাকা এখনো অন্ধকারাচ্ছন্ন রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাত্র তিন মাস আগে আধুনিক এই বাতিগুলো বসানো হয়েছিল। খুঁটিগুলোর উপরের অংশে প্রজাপতির মতো ডানা মেলে থাকা দুইপাশে দুটি করে এলইডি বাতি লাগানো হয়। এ কারণে সড়কটি রাজশাহীর ‘প্রজাপতি সড়ক’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) বিদ্যুৎ বিভাগ ‘হ্যারো ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজটি বাস্তবায়ন করে। এতে ব্যয় হয় পাঁচ কোটি ২২ লাখ টাকা। সড়কবাতির খুঁটি ও বাতি চীন থেকে আনা হয়। গত ২৭ জানুয়ারি সড়কবাতিগুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

এদিকে উদ্বোধনের তিন মাস পরই প্রথম ঝড়ে সড়কবাতিগুলো এভাবে পড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি এবং গাফিলতির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকাল ৪টার দিকে হড়মড় শব্দ করে খুঁটিগুলো সড়কের আইল্যান্ডের ওপর পড়তে থাকে। সড়কের আইল্যান্ডে না পড়ে সড়কে পড়লে অনেক মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটত।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক এসএম রেজোয়ানুল হক জানিয়েছেন, রো্ববার বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে ধুলিঝড় শুরু হয়। নগরীর বিনোদপুর এলাকায় যেখানে আবহাওয়া অফিস, সেখানে ধূলিঝড় স্থায়ী ছিল ৪টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত। তবে নগরীর অন্যান্য এলাকায় বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দমকা হাওয়া বইছিল। ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৫ কিলোমিটার।

এই ঝড়েই সড়কবাতির খুঁটি পড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ ও যান্ত্রিক) রেয়াজাত হোসেন রিটু বলেন, ঝড়ের কারণে খুঁটিগুলো হেলে পড়েছে। কিছু পড়ে গেছে। আমাদের ওয়ারেন্টির সময় আছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিজ দায়িত্ব আবার সব ঠিক করে দেবে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হ্যারো ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্ত্বাধিকারী আশরাফুল হুদা টিটো বলেন, খবর পেয়ে আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। আমাদের এক বছরের ওয়ারেন্টির মেয়াদ আছে। প্রয়োজনে পাঁচ বছর দেব। আর ক্ষতিগ্রস্ত খুঁটিগুলো রাতের মধ্যেই ঠিক করে দেওয়া হবে।