লকডাউন: রাজধানীর বাসস্ট্যান্ড গুলোতে অফিসগামী মানুষের অপেক্ষা

বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত জরুরি প্রয়োজনে সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হয়েছে।

লকডাউনে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় অফিসগামী মানুষ পড়েছে বিপাকে। সোমবার (০৫ এপ্রিল) এক সপ্তাহের লকডাউনের প্রথমদিন সকালে বাসস্ট্যান্ডগুলোতে অফিসগামী মানুষদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায়। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিকশা, সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও রাইড শেয়ারিং মোটরসাইকেলে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে দেখা যায় যাত্রীদের।

আজ সকাল ৮টা থেকে রাজধানীর মিরপুর ১৪, ১২, ১১, ১০ ও ২ নম্বর বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আসমা আক্তার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে যাবেন খামারবাড়ি (ফার্মগেট)। দীর্ঘ ৪৫ মিনিট অপেক্ষার পরে কোনো পরিবহন না পেয়ে রিকশায় যাত্রা শুরু করেন খামারবাড়ির উদ্দেশে।

তিনি বলেন, লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ অফিস খোলা আছে। এ অবস্থায় অফিস যেতে হবে। চাকরি চলে গেলে পরিবার নিয়ে বিপদে পড়তে হবে। কি আর করার, কষ্ট হলেও অফিসে যেতে হবে।

মিরপুর ১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের রাইড শেয়ারিং চালক শাহিন হোসেন বলেন, সকাল থেকেই বেশিরভাগ চাকরিজীবী মানুষদের বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। তারা রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে চুক্তিতে নিজেদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অ্যাপের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং বন্ধ রয়েছে। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে তো আর পেটে খাবার জুটবে না। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় নেমেছি। না হলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। পুলিশ ধরতে পারলে মামলা দিচ্ছে। এ কারণেই স্বাভাবিকের তুলনায় চুক্তিতে রাইড শেয়ারিংয়ে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ভাড়া বেশি নিচ্ছি।

আব্দুল সাকুর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। এক ঘণ্টা ধরে মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছেন। মতিঝিল যাওয়ার মতো পরিবহন পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছে। কিন্তু অফিস-আদালত বন্ধ করেনি। এ কারণে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। গতবার তো অফিস বন্ধ করেছিল।

তিনি বলেন, গত বছর যখন সাধারণ ছুটি ঘোষণা হয়, তখন মানুষের ভেতরে করোনা ভাইরাস নিয়ে অনেক আতঙ্ক ছিল। এবারের লকডাউনে মানুষের মধ্যে তেমন বিধি-নিষেধ মানতে দেখা যাবে না। কারণ মানুষ করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জানে।