সাতক্ষীরায় ভুয়া এনএসআই সদস্য আটক

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের প্রশাসনিক অঞ্চল সাতক্ষীরার তালা থেকে মুজাহিদুল ইসলাম (৩০) নামে এক ভুয়া এনএসআই সদস্যকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মে) দুপুরে উপজেলার সুজনসাহা বাজার থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় এনএসআই সাতক্ষীরা অফিসের কর্মকর্তারা তাকে আটক করেন।

প্রতারক মুজাহিদুল ইসলাম (৩০) খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার নরনিয়া গ্রামের আশরাফ মোড়লের ছেলে।

আটক মুজাহিদুল ইসলাম কখনও দুদক কর্মকর্তা, কখনও এনএসআই কর্মকর্তা, কখনও ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের বিভাগীয় অফিসার, আবার কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তদবিরের নামে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

একইসঙ্গে মুজাহিদ ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এজেন্ট হিসেবে কাজ করেন বলেও একটি সূত্র জানিয়েছে।

জানা যায়, প্রতারণার ফাঁদ পেতে তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের আলতাফ হোসেনের কাছ থেকে টাকা নিতে আসলে স্থানীয়দের সহায়তায় সুজনসাহা বাজার থেকে এনএসআই সাতক্ষীরা অফিসের উপ-পরিচালক জাকির হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে আটক করে। তারা বেশ কিছুদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রাখছিলেন। পরে সাতক্ষীরা ডিবি ও তালা থানা পুলিশের একটি টিম প্রতারক মুজাহিদকে থানায় নিয়ে যায়।

প্রতারণার শিকার ইসলামকাটি গ্রামের আলতাফ হোসেন বলেন, মুজাহিদুল এনএসআই পরিচয় দিয়ে প্রায় এক বছর ধরে চাকরি, বাড়ি কিনে দেওয়া ও বিদেশ পাঠানো এবং হজে পাঠানোর কথা বলে আমি, আমার ভাই শাহিনুর ও ইসলামকাটি গ্রামের দেলবার আলীর ছেলে শফিকুলের কাছ থেকে চার কিস্তিতে ১৩ লাখ টাকা নিয়েছে। এছাড়া ডুমুরিয়া এলাকার হালিম মোল্যা, একই থানার কুলবাড়িয়া গ্রামের মোস্তা কামাল ও গণি মোল্যার কাছ থেকে ২৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মুজাহিদুল।

জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) সাতক্ষীরা অফিস সূত্রে জানা গেছে, মুজাহিদুল ইসলাম নিজেকে কখনও এনএসআই অফিসার, কখনও ইন্টেলিজেন্স অফিসার, কখনও আর্মি অফিসার এবং কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিতেন।

তার মোবাইলে ও ফেসবুক থেকে বিভিন্ন ভুয়া আইডি কার্ড এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীর অফিসারদের ছবি, বিদেশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার ছবি ও লোগো পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রতারণা করে তিনি প্রায় ৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার দ্বারা প্রতারণার শিকার সাত-আট জন ভুক্তভোগীর নাম ঠিকানাও পাওয়া গেছে।

সূত্রটি আরো জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুজাহিদুল জানান, একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা তাকে ট্রেনিং দিয়েছে। তার ভাষ্য মতে, গোয়েন্দা সংস্থাটি ইসরায়েলের মোসাদের সদস্য হতে পারে। ট্রেনিং শেষে তারা তাকে সারাদেশে ইন্টেলিজেন্স তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দিয়েছে। এ জন্য তাকে মাসিক ভাতাও দেওয়া হয়।

তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল জানান, প্রতারক মুজাহিদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে।

Scroll to Top