নিত্যপণ্যের বাজার: কেজিতে গরুর মাংসের দামকেও ছাড়াল মুরগি

দেশের বাজারে হু হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। অন্যান্য নিত্যপণ্যের পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগিও। শবেবরাতের আগে আরও এক দফা বেড়েছে মুরগির দাম। একদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার ও লাল লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। আর পাকিস্তানি কক মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা পর্যন্ত। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য মিলেছে। গতকাল ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। আর পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়।

তবে বিভিন্ন অনলাইন শপে এই মুরগির দাম আরও বেশি। এক অনলাইন শপের ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, আধা কেজি ওজনের একটি সোনালিকা মুরগির দাম দেওয়া হয়েছে ৩২০ টাকা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি মুরগির দাম হয় ৬৪০ টাকা। আর দেশি মুরগির কেজি পৌনে ৮০০ টাকার মতো। গরুর মাংসের কেজি দেওয়া হয়েছে ৫৬৯ টাকা। এই হিসাবে মুরগির দাম গরুর মাংসকে ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়া মাসতিনেক আগেও সোনালিকা মুরগির কেজিপ্রতি দাম ছিল ২২০ টাকা।

দেশি মুরগির দাম ছিল কেজিপ্রতি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা। পিছিয়ে নেই ব্রয়লার মুরগিও। বাজারে মাসতিনেক আগে যে মুরগির কেজি ১৩৫ টাকা ছিল, তা এখন ১৬৫ টাকা। খাসির মাংসের কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। প্রতি বছর পবিত্র শবেবরাতের আগে ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কিছুটা বাড়ে। তবে সোনালিকা ও দেশি মুরগির দাম খুব একটা বাড়তে দেখা যায় না। এবার সব ধরনের মুরগি ও গরুর মাংসের দাম বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায়। আর পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। তাদের মতে দুদিন পরই শবেবরাত। শবেবরাতে মুরগির চাহিদা বেশি থাকে। এ কারণেই এখন মুরগির দাম বেড়ে গেছে। শবেবরাতের আগের দিন মুরগির দাম আরও বাড়তে পারে।

অন্যদিকে শবেবরাতকে সামনে রেখে মুরগির দাম বাড়লেও স্বস্তি দিচ্ছে পিঁয়াজের দামে। হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার পর গত সপ্তাহে দাম কমা পিঁয়াজের দাম নতুন করে আরও কমেছে। এতে দুই সপ্তাহে পিঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ২০ টাকা। এখন ভালো মানের দেশি পিঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। আর দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি। পিঁয়াজের পাশাপাশি স্বস্তি দিচ্ছে রসুন, আদা, জিরা এবং ডিম। ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।

একই দামে বিক্রি হচ্ছে দেশি আদা। জিরা পাওয়া যাচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। দুই সপ্তাহ আগে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শজিনার দাম কমে ১০০ টাকায় চলে এসেছে। অন্য সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে স্থিতিশীল রয়েছে। তবে শসার দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া শসার দাম বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে পটল ও ঢ্যাঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২৫ টাকা। শিমের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এছাড়া বেগুনের কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, গাজরের কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফুলকপি, বাঁধাকপির ও লাউয়ের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস।