এ কেমন ভাত খাওয়ানো হচ্ছে জাবির ক্যান্টিনে?

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আল বেরুনী হলের ক্যান্টিনে একদিন আগে রান্না করা পঁচা-বাসি ভাত সকালে ধুয়ে শিক্ষার্থীদের খাওয়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার এমন বাসি ভাত ধৌত করার সময় হাতেনাতে এক কর্মচারীকে আটক করে শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আল বেরুনী হলের মার্কেটিং বিভাগের ৪৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী রাজিবুল হক ক্যান্টিনের একজন কর্মচারীকে গামলায় করে সাদা কিছু ধুতে দেখেন। কৌতূহল নিয়ে তিনি কাছে গিয়ে দেখেন এগুলো বাসি ভাত।

রাজিবুল তখনই বিষয়টি হলের ৪১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মওদুদ সুজনকে জানান। মওদুদ সুজন ঘটনার সত্যতা দেখে হলের কর্মচারী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সাদাত সায়েমকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় হাতেনাতে ক্যান্টিনের কর্মচারী লিটনকে ভাত ধৌত করা অবস্থায় দেখেন। ভাত ধৌত করার কারণ জানতে চাইলে কর্মচারীটি কোন উত্তর দিতে পারেনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভাতগুলি দুপুরে নতুন রান্না করা টাটকা ভাতের সঙ্গে মেশানোর জন্য ধোয়া হচ্ছিলো।

এদিকে এ অভিযোগের বিষয়ে ক্যান্টিন পরিচালক শরীফের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তার ছোট ভাই আরিফ জানায়, শরীফ পারিবারিক কাজে বাড়িতে গেছে। বাসি ভাত ধৌত করার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে সে অভিযোগ স্বীকার করে বলে, আগের রাতের অনেক বেশি ভাত রান্না করা হয়েছিল। সেগুলো সব বিক্রি হয় নাই। সেই ভাতগুলো লিটন ধুচ্ছিল। ‘কতদিন ধরে এভাবে টাটকা ভাতের সঙ্গে বাসি ভাত মেশানো হচ্ছে?’ জানতে চাইলে জবাবে আরিফ সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি।

এ ব্যাপারে আল বেরুনী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মওদুদ সুজন বলেন, ‘হাতেনাতে বাসি-পঁচা ভাত ধুয়ে দুপুরের খাবারের সঙ্গে মেশানোর এই কর্ম আমরা ধরেছি এবং প্রাধ্যক্ষকে জানিয়েছি। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা চাই ক্যান্টিন পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের সেবার মানসিকতা আছে এমন কেউ ক্যান্টিনের দায়িত্ব গ্রহণ করুক।

আল বেরুনী হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, কেন বাসি ভাত ক্যান্টিনে ধোয়া হচ্ছিল সেটি জানাতে ‘কারণ দর্শানো’র নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কারণ দর্শানোর পরে ক্যান্টিন পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে এ ঘটনা হলে জানাজানি হলে শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনের ব্যাপারে নানা অভিযোগ দিতে থাকে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, খাবারের নিম্নমান, হল প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের তোয়াক্কা না করে নিজে উচ্চমূল্য নির্ধারণ, কম সংখ্যক কর্মচারী দিয়ে ক্যান্টিন পরিচালনা ইত্যাদি। একাধিক শিক্ষার্থী জানান, এই বাসি ভাত গরম ভাতের সঙ্গে মিশিয়ে তাদের দীর্ঘদিন খাওয়ানো হতো।

এ বিষয়ে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু বলেন, নিজের স্বার্থের জন্য কিভাবে এতগুলো ছাত্রের ক্ষতি করতে পারে একজন! ক্যান্টিন পরিচালনাকারীকে অবিলম্বে পরিবর্তন করার জোর দাবি জানাচ্ছি। ইয়াসির আরাফাত স্মরণ নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ক্যান্টিনে দাম বেশি, মান খারাপ। রান্নায় কোন স্বাদ নাই, মশলার ব্যবহার নাই। মান নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ করা সত্ত্বেও তারা নির্বিকার!

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ২৫ আগস্ট ২০১৭,

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস

Scroll to Top