কোন কালিমা রটেনি, কুৎসাও তাদের আঁচ করেনি

বর্তমানে শোবিজের পরিচিতি এক সংলাপ, আমরা স্রেফ বন্ধু। কিছুদিন পর সেটা প্রেম কিংবা পরিনয়ে গড়ায়। অথবা কেউ তাঁদের ঘনিষ্টতা আবিষ্কার করলেও পরিচিত সংলাপটি দিয়ে এড়িয়ে যান। শোবিজের এমন অনেক উদাহরণ আছে, বিপরীতে লিঙ্গের বন্ধুত্ব রয়েছে যুগ যুগ ধরে। কখনো সেখানে কোন কালিমা রটেনি। কোন কুৎসা তাদের আঁচ করেনি। পেশার বাইরে পারিবারিকভাবেও তারা ঘনিষ্ঠ।‘বন্ধু’ শব্দটার সঠিক প্রয়োগ তাদের দেখলেই বোঝা যায়। এমন কয়েক বন্ধু জুটির খোঁজ দেয়া হল:

আফজাল- ‍সুবর্ণা

দুজনার বন্ধুত্ব নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। নান্দনিক এ অভিনয় শিল্পীদের বহু বছরের বন্ধুত্ব। কখনো সেখানে ফাটল ধরেনি। হুমায়ূন ফরিদীর সঙ্গেও আফজাল হোসেনের ভালো সম্পর্ক ছিলো। কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে আফজাল- সুবর্ণার জুটি পর্দায় যেমন, বাস্তবে তাদের বন্ধুত্ব তেমন। কখনো কোন গসিপ এ জুঁটিকে ছুতে পারেনি।

ফেরদৌস- মৌসুমী- পূর্ণিমা-ঋতুপর্ণা

মৌসুমী কিংবা ফেরদৌসের দুজনারই আলাদা সংসার রয়েছে। কিন্তু তাঁরা ভালো বন্ধু। শুধুমাত্র শুটিংই নয়। পারিবারিক আড্ডাতেও একে অন্যের সঙ্গী। ঢালিউডে দুই ডজনেরও বেশি ছবিতে জুটি বেঁধেছেন ফেরদৌস-মৌসুমী। এই জুটি দর্শকপ্রিয়তাও পেয়েছে। বন্ধুত্ব নিয়ে মৌসুমী বলেন,‘ বন্ধুত্ব মূল্যবান একটা সম্পর্ক। শোবিজে আসার পর সবচেয়ে যে কাছের বন্ধু ছিল তাকে তো বিয়েই করে ফেললাম। পরবর্তীতে আরও অনেকেই বন্ধু হয়ে এসেছে। কিন্তু ভালো ও স্থায়ী বন্ধু বলতে ফেরদৌসকে পেলাম। ওর সঙ্গে আমার বন্ধুত্বটা আশাকরি চিরদিনই থাকবে। আসলে বন্ধু হতে হলে ভালো মনের দরকার। যা ওর মধ্যে আছে। সবসময় সঠিক সিদ্ধান্তটা দিয়ে ও এগিয়ে আসে। বলা বাহুল্য পূর্ণিমা ও ঋতুপর্ণাও ফেরদৌসের তেমনি জিগরি দোস্ত।

মাহফুজ আহমেদ- শমী কায়সার

প্রায় দুইযুগ ধরে তাদের বন্ধুত্ব চলছে। নাটকে কাজ করতে গিয়েই তাদের এ বন্ধুত্ব। তবে অনেকদিন তাদের কাজ করা হচ্ছিলো না। এ বছর নির্মাতা চয়নিকার পরিচালনায় নতুন একটি নাটকে অভিনয় করেন তাঁরা। এই যে একসঙ্গে অভিনয়, পারিবারিকভাবেও রয়েছে মেলবন্ধন। কখনো কোন প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়নি? আসলে আমরা যে বন্ধু এটা সবার জানা। আমার কাছে বন্ধু শব্দটির গুরুত্ব অনেক। এর অর্থও অনেক বিস্তৃত। আমার মতে বন্ধুত্বের সম্পর্কটা চিরকালই একই রকম। সময়ের চাহিদার কারণে কেবল ওপরের খোলসের পরিবর্তন হয় এই আর কী। দুটি নরনারী কেন ভালো বন্ধু হতে পারবে না সেটা আমার বোধগম্য নয়!’

অপূর্ব-তারিন

অপূর্ব ও তারিনের বন্ধুত্বও সবার মুখে মুখে। ২০০৭ সাল থেকে তাদের বন্ধুত্বর শুরুটা। আজ্যবধি একই গতিতে চলছে। সুখে-দুঃখে সবসময়ই খোঁজ নেন দু’জন দু’জনার। অপূর্ব বলেন ‘ মিডিয়ায় বাইরে আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। মিডিয়ায় সে তুলনায় খুবই কম। সেখান থেকে বন্ধুর তালিকা করলে প্রথমেই তারিনের কথা বলবো। ওর সঙ্গে আমার সব কথা শেয়ার করতে পারি। এটা আমার ওয়াইফও জানে। আমার সঙ্গে সারিকারও বেশ ভালো বন্ধুত্ব। সারিকার সঙ্গে তো আমার স্ত্রীর আরো ভালো সম্পর্ক। সারিকা জোর করে স্ত্রীকে মডেলিংও করায়। ও প্রায়ই আমাদের বাসায় আসে। ওর মেয়ের সঙ্গেও আমার ছেলের আবার একটা বন্ধুত্ব হয়ে গেছে। এ বন্ধুত্বটা এমনই যা নিয়ে কেউ কখনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি।

নোবেল- মৌ

দুজন একসঙ্গে বহু বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। জনপ্রিয় এ জুটির বোঝাপড়াটাও অসাধারন। আর তাইতো এতটা দিন একসঙ্গে চলা সম্ভব হয়েছে। এ নিয়ে জাহিদ হাসান কিংবা নোবেলের স্ত্রীরও কখনো কোন অভিযোগ ছিলো না। দুজনার বন্ধুত্বটা আজও অমলীন আছে।

ইমন-সারিকা

তাদের বন্ধুত্বটাও বেশ পুরনো। মাঝখানে শোবিজ থেকে ছুট দিয়েছিলেন সারিকা। কিন্তু ইমনের সঙ্গে ঠিকই যোগাযোগ ছিল। অভিনয়ে নিয়মিত হওয়ার পর সারিকা- ইমন ফের জুটি হয়ে নাটকে অভিনয় করছেন।

জন-মিথিলা

২০০৪-০৫-এর সময়কার কথা, তখন পরিচয়। একসঙ্গে ব্ল্যাক ব্যান্ড ছিল তাহসান- জনের। তাহসানই পরিচয় করিয়ে দেয় জনের সঙ্গে। কিন্তু সম্পর্কটা শুধু তাহসানের বন্ধুতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। জন মিথিলারও ভালো বন্ধু। তবে বন্ধুত্বটা গভীর হয়েছে একসঙ্গে নাটকে অভিনয় শুরু করে। এই বন্ধুত্বের বয়স প্রায় তিন বছর। জুটি হয়ে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন।

এছাড়াও মিডিয়ায় বেশ কিছু আলোচিত বন্ধুত্ব রয়েছে। যারা বড় গলায় একে অপরকে বন্ধু বলে ডাকে। যে কোন বিপদে সবার আগে গিয়ে হাজির হয়। কিন্তু কখনো কোন মিডিয়া তাদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিতে পারে না। তারা এমনই একটা সুন্দর সম্পর্ক বজায় রেখে যুগ যুগ কাটিয়ে দেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বলা যায় সাজু খাদেম ও নাদিয়া, পল্লব-রিয়া, নিশো-অপর্ণা, সাফা কবির-জোবান, শবনম ফারিয়া- তৌসিফ- সিয়াম- টয়া- বৃষ্টি- সৌমিক- সিয়াম- পিয়া- আশা সহ একঝাক নবাগতদের রয়েছে বন্ধুত্ব। তারা একসঙ্গে বিভিন্ন পার্টির আয়োজন করে থাকেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ০৫  নভেম্বর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস পি