আবারও শাকিব খানের রেকর্ড

ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান রূপালি পর্দায় আছেন প্রায় ২০ বছর ধরে। র মধ্যে নয় বছর ধরে তিনি শীর্ষে।

শুধু ব্যবসা সফল ছবির দিক নিয়ে নয়, পারিশ্রমিকের দিক দিয়েও তিনি দীর্ঘদিন শীর্ষস্থান ধরে রেখেছেন। এখন শাকিব খান ছবি করার জন্য রেকর্ড ৪০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন।

গত বছরের মাঝামাঝি সময়েও শাকিব খান ৩০ লাখ টাকা নিয়ে ছবি করতেন। যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘শিকারি’ হিট হওয়ার পর ‘নবাব’ করার সময় থেকে তিনি ছবিপ্রতি ৪০ লাখ টাকা করে পারিশ্রমিক নিচ্ছেন। ক্ষেত্র বিশেষে এই দাবি ৫০ লাখও ছাড়াচ্ছে।
আগে চার-পাঁচটি ছবিতে ৪০ লাখ নিলেও মূলত তখন শাকিব খানের পারিশ্রমিক ছিল ৩৫ লাখ টাকা।

শাকিব খানকে নিয়ে এ মুহূর্তে কাজ করা একাধিক পরিচালক, প্রযোজক সংবাদ মাধ্যমের কাছে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে রেকর্ড এই পারিশ্রমিক নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শাকিব খানকে নিয়ে এ মুহূর্তে এক সাথে চারটি ছবি নির্মাণ করা পরিচালক উত্তম আকাশ বলেন, ‘এ মুহূর্তে কাকে নিয়ে ছবি বানালে বাজেট তুলে আনা সম্ভব হয়, আপনারাই বলেন? তাছাড়া শাকিবের মত সব ধরনের চরিত্রে কোন নায়ক নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন? উত্তরে নিশ্চয় শাকিব খানের কথায় বলবেন। তাহলে তাকে এত টাকা পারিশ্রমিক কেন দিব না?’

তবে একই প্রযোজনা সংস্থা একাধিক ছবিতে এক সাথে চুক্তিবদ্ধ করালে শাকিব খান কিছুটা ছাড় দিচ্ছেন। যেমন: শাপলা মিডিয়া এ সপ্তাহে তাকে ‘মামলা হামলা ঝামেলা’, ‘চিটাগাংইয়া পোয়া নোয়াখাইল্লা মাইয়া’ ও ‘আমার দেশ আমার প্রেম’ ছবি তিনটির জন্য ৩৫ লাখ করে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দিয়েছে।

পারিশ্রমিকের অংকটি স্বীকার না করলেও শাপলা মিডিয়া প্রধান নির্বাহী সেলিম খান বলেন, ‘কত টাকা দিয়েছি, তা বলছি না। কিন্তু, আমরা তাকে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক দিয়েই চুক্তিবদ্ধ করিয়েছি এবং তার পুরোটাই অগ্রিম।’

বেশি পারিশ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে শাকিব খানের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গতবছর ‘শিকারি’ ছবির প্রচারণা অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘ডিমান্ড আছে বলেই ইন্ডাস্ট্রি আমাকে এত টাকা দিচ্ছে। ডিমান্ড না থাকলে তো দিবে না। তাছাড়া আমি তো কারও কাছ থেকে জোর করে টাকা নিচ্ছি না।’

২০০৬ সালে ‘কোটি টাকার কাবিন’ বাম্পার হিট হবার পরই পাল্টে যায় শাকিব খানের জীবন। এরপর তিন লাখ থেকে তিনি এক লাফে পারিশ্রমিক ১৫ লাখ টাকা নিতে শুরু করেন।

২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা হিট দিয়েছেন শাকিব খান। এ সময় তিনি দাদি মা, চাচ্চু, নাম্বার ওয়ান শাকিব খান, চাচ্চু আমার চাচ্চু, নিঃশ্বাস আমার তুমি, টাইগার নাম্বার ওয়ান, কিং খান, কোটি টাকার প্রেমের মত বাম্পার হিট ছবি উপহার দেন।

ফলশ্রুতিতে তিনি ছবি প্রতি ৩০/৩৫ লাখ টাকা করে নিতে শুরু করেন। এমনকি চার-পাঁচটি ছবিতে ৪০ লাখ নিয়েছিলেন।
২০১২ পর বেশ কিছু ছবি ব্যবসায়িকভাবে মুখ থুবড়ে পরলে হুট করে তার হাতে থাকা ছবি সংখ্যা কমে যায়। তখন পারিশ্রমিক কমিয়ে ১০ লাখে নিয়ে আসেন। এর নিচেও নেন কিছু কিছু ছবিতে।

কথিত আছে ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভালোবাসা আজকাল’-এ জাজ মাল্টিমিডিয়া তাকে মাত্র ৬ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দিয়েছিল।
২০১৩ সালে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী’, ‘ফুল অ্যান্ড ফাইনাল’ ব্যবসায়িক সফলতা পাবার তিনি আবার ২৫ লাখে পারিশ্রমিক নিয়ে আসেন। গত তিন-চার বছর ২০/২৫ লাখের মধ্যে ছবি প্রতি তার পারিশ্রমিক উঠা-নামা করছিল।

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ, রিয়াজ, ফেরদৌসরা সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পারিশ্রমিক নিয়েছেন। এদের মধ্যে সালমান শাহই একমাত্র নায়ক যিনি ক্যারিয়ারের দুই বছর পূর্ণ হবার আগে ১০ লাখ টাকার অধিক টাকা পারিশ্রমিক হেঁকেছিলেন এবং প্রযোজক ও পরিচালকরা তাকে এর চেয়েও বেশি টাকা দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম