‘আল্লাহর ওপর ভরসা করবেন, ইনশা আল্লাহ আমাদের জাতীয়তাবাদী দল সরকার গঠন করবে, তখন মানুষই থাকবে না। আমি যা বলব, এখানে তা–ই আইন, আল্লাহর হুকুম। কাউকে ভয় করতে হবে না।’
৫ আগস্টের পরের কোনো এক সময় এই বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দলের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সহকারী সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের একটি বিল নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে একটি ঘরোয়া সভায় এসব কথা বলেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন এই বিএনপি নেতা।
তবে তার বক্তব্যের ৩৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ সম্প্রতি নতুন করে সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আমিনুল ইসলামকে বলতে শোনা যায়, ‘…সবই খালি হাজি (আমিনুল ইসলাম) কইর্যা দিবে, তা না। আপনাদেরও দায়িত্ব আছে। বিল যে আছে, বিল তো কেউ উঠিয়ে লিয়া যাইবে, আমি বাঁইচা থাকাকালীন কারও ক্ষমতা আছে? ফের আগের নিয়মে চলবে। যা ভাগ করে দিয়াছি, তার বাইরে একটা সুচও নড়বে না। ভোটের আগে এগলা করব না। এক–দুই মাসের লাইগা সমস্যা হইবে না। আল্লাহর ওপর ভরসা করবেন, ইনশা আল্লাহ আমাদের জাতীয়তাবাদী দল সরকার গঠন করবে। তখন মানুষই থাকবে না। আমি যা বলব, এখানে তা–ই আইন, আল্লাহর হুকুম। ভয় করতে হবে না।’
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, ‘ভিডিওটি আমি দেখেছি। এমন দম্ভপূর্ণ বক্তব্য আইনসংগত নয়। সভাটি তিনি করেছেন গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউপির তার (আমিনুল ইসলাম) কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে। কারও পদ-পদবি জানি না। তাদের জন্যই বিলটি ভোগদখলের ব্যবস্থা করে দেন আমিনুল ইসলাম।’
জানতে চাইলে আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ নয়। এটি একটি ঘরোয়া সালিস। ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর কোনো এক সময়ের ঘটনা। গোমস্তাপুরের রাধানগর ইউনিয়নের একটি বিল নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে বিরোধ মেটানোর জন্য একটি সালিস অনুষ্ঠিত হয় আমার বাড়িতেই, নাচোলে। সময়টা ঠিক মনে করতে পারছি না। সালিসে আমি যেটা নির্ধারণ করে দিয়েছি, সেভাবেই বিল পরিচালনা করছেন তারা। এটা ছিল জেলে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব। কে কত ভাগ পাবে, আমিই সেটা ঠিক করে দিয়েছিলাম, সেভাবেই বিলটি চলছে।’ তিনি বলেন, ‘অনেক আগের এ বক্তব্য নিয়ে প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।’
জানা গেছে, বাংলা সন ১৪২৪ থেকে ১৪৩০ পর্যন্ত উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ছয় বছরের জন্য গোমস্তাপুরের কাজিগ্রাম মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে বিলটি ইজারা দেওয়া ছিল। ইজারামূল্য ৭০ লাখ। ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে সরকার আয় করেছে ১ কোটি এক লাখ ৫০ হাজার টাকা। ১৪৩১ সন (২০২৪ সাল) থেকে ইজারা হয় না। এখন খাস কালেকশনের মাধ্যমে চলছে বিলটি। উপকারভোগীরা আমিনুল ইসলামের লোকজন।






