চিকিৎসার আড়ালে রোগীদের যা করতো নার্স

কেঁচো খুঁড়তে গিয়েই বেরিয়ে পড়লো আস্ত কেউটে। রক্ষকই কখন যে ভক্ষক হয়ে উঠেছিল,কেউ টের পায়নি এতদিন। যখন জানা গেল,পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে সঙ্গে বিচারকেরও চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। চিকিৎসার আড়ালেই অন্তত ৯০ জন রোগীকে নৃশংসভাবে খুন করেছে জার্মানির এক নার্স।

নিউইর্য়ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বহুদিন আগেই জার্মানির ডেলমেনহর্স্ট হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করা হয় নিয়েলস হোজেল নামের ওই পুরুষ নার্সকে। চল্লিশ বছরের ওই নার্সের বিরুদ্ধে তখন ছয় জন রোগীকে হত্যার অভিযোগ ছিল। অভিযোগ প্রমাণিতও হয়। ২০০৮ সালে তাকে সাড়ে সাত বছরের সাজা ঘোষণা করা হয়। এই হাজতবাসের মধ্যেই নিয়েলসকে জেরা করে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ।

পুলিশের কাছে চল্লিশ বছরের নার্স স্বীকার করে,১৯৯৯ সাল থেকে এই কুকর্মে যুক্ত সে। প্রথমে ওল্ডেনবুর্গ হাসপাতালে ও পরে ডেলমেনহর্স্ট নার্সিংহোমে এই হত্যালীলা চালাত। শুরুতে রোগীকে এমন ইঞ্জেকশন দিত যাতে তার হৃদযন্ত্র বিকল হতে শুরু করে। তারপর মরণাপন্ন রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করত। কিছু ক্ষেত্রে রোগী বেঁচে যেত,কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত। নিজের একঘেয়েমি কাটাতেই নাকি মৃত্যুর এই ভয়ঙ্কর খেলা খেলত নিয়েলস। কোনও রোগীকে বাঁচাতে পারলে নাকি দারুণ একটা আনন্দ হত তার। কিন্তু রোগীর মৃত্যু হলে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ত সে। আবার পরের রোগীর উপর নতুন করে ‘এক্সপেরিমেন্ট’ চালাত।

নিয়েলসের অকপট স্বীকারোক্তি শুনে হতবাক পুলিশও। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য অনেক মৃতদেহ কবর থেকে খুঁড়ে বার করতে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর এই সংখ্যাটা ইতিমধ্যেই নাকি ১০০ ছাড়িয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর,এর মধ্যে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু নিয়েলসের ইঞ্জেকশেনর জন্য হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। মানবসেবার অঙ্গীকার করা একজন নার্সের মধ্যে এমন ‘সিরিয়াল কিলার’-এর মানসিকতা লুকিয়ে থাকতে পারে,তা ভেবেই হতবাক পুলিশকর্তারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সমনেয় জার্মানিতে সবচেয়ে কুখ্যাত খুনি হিসাবে নিয়েলসকে ধরা হচ্ছে। হিটলারের জমানার পর এমন নৃশংসতার সাক্ষী হলেন জার্মানরা।

বাংলাদেশ সময় : ১২২৬ ঘণ্টা, ২৯ আগস্ট, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ