বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ২০ হাজার টাকা: প্রধানমন্ত্রী

একজন মুক্তিযোদ্ধা হল এমন একজন ব্যক্তি যিনি তার দেশের শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যমূলক আচরণ, শোষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন ও বর্বর অত্যাচার থেকে মুক্তির লক্ষ্যে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে থাকেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ১২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন যারা মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা ১২ হাজার, ১৫ হাজার টাকা করে পান আগামীতে তারা সবাই ২০ হাজার টাকা করে পাবেন বলে তিনি ঘোষণা দেন।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে (জিটুপি) প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব নেন। সেই সঙ্গে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন তাদের কল্যাণের জন্যই তিনি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট গড়ে তুলেছিলেন। এর উদ্দেশ্য হলো- আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, বিধবাদের পুনর্বাসনসহ সবাইকে পুনর্বাসনের জন্য, নির্যাতিত মা-বোনদের চিকিৎসা ভাতার ব্যবস্থা করা। এ সমস্ত কাজগুলো তিনি একে একে করে যাচ্ছিলেন কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে। মুক্তিযোদ্ধারা যাতে সুস্থভাবে বাঁচতে পারেন সেই ব্যবস্থাই তিনি করে যাচ্ছিলেন।

দুর্ভাগ্য ৭৫ এর পরে যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা সেভাবে কার্যক্রমগুলো আর করেনি। ২১ বছর পর যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনই একটা উদ্যোগ নেই মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার। সেই সাথে যারা দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা তাদের কিছু সহযোগিতার ব্যবস্থাও আমরা করি, ভাতার ব্যবস্থা করে দিই। আর যারা খেতাবপ্রাপ্ত তাদের জন্যও আমরা ভাতার ব্যবস্থা করি। সেই ভাতা যখন থেকে চালু করি তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে মাসিক ৩০০ টাকা আমরা চালু করেছিলাম। আজকে তা ১২ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।

‘আমি মনে করি এই সময় ১২ হাজার টাকা কিছু না। আমি ইতোমধ্যে কল্যাণ ট্রাস্টের বোর্ডের মিটিং ছিল, এতগুলো ভাগ ভাগ না করে আমার মনে হয় নীচের যেগুলো ভাগ আছে সেগুলো এক জায়গায় করে নিয়ে এসেছে আমরা ২০ হাজার টাকা করেই মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা করে দেবো। তবে আজকের যে ভাতাটা অনলাইনে যাবে যেটা আমরা পেয়েছি সেভাবেই যাবে। এটা একটু করতে সময় লাগবে, কারণ বাজেটে টাকা বরাদ্দ করতে সময় লাগবে। তবে এটা আমরা করে দেবো।

আমরা সেভাবে এস্টিমেটও করেছি যে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা, তার পরে যারা আছেন ১২ হাজার টাকা করে পান, কেউ ১৫ হাজার, কেউ ২০ হাজার সেটা না পেয়ে সবাই ২০ হাজার টাকা করেই পাবেন। যারা বীরশ্রেষ্ঠ তাদেরটা একটু আলাদাভাবে পাবেন, তাদের আলাদা আছে। বাকি আমি মনে করি সবাইকে এক সাথে করে দেওয়াটাই ভালো। কারণ সবাই তো মুক্তিযুদ্ধই করেছে। এত ভাগ ভাগ না করে এটাকে এক জায়গায় নিয়ে এসে মন্ত্রণালয় বসে ঠিক করে নেবে। বিশেষ করে ১৫ হাজার আর ১২ হাজার সব মিলিয়ে ২০ হাজারে নিয়ে আসলে তখন সবাই ২০ হাজার টাকা করে ভবিষ্যতে পাবে। ’

এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষযক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ।