‘সু চি’র কথা সত্য হলে আমাদের মেরে ফেলুন’

মিয়ানমারের নেতা অং সান সু চি’র বক্তব্য মিথ্যা উল্লেখ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বলেছেন, তার বক্তব্য সত্য হলে তারা মরে যেতে প্রস্তুত আছেন।

তিনি মিথ্যাবাদী বলে মন্তব্য করে কুতুপালং ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী আব্দুল হাফিজ বলেন, অর্ধশতাব্দী ধরে সেনা শাসনে নিষ্পেষিত হওয়ার সময় তারা সু চিকে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু রোহিঙ্গারা অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় এখন বেশি হত্যা-নির্যাতন-অত্যাচার ভোগ করছে।

যখন জানতে পারেন যে সু চি তাদের ভোগান্তির জন্য তাদেরকেই দায়ী করেছেন তখন ক্ষোভে ফেটে পড়েন হাফিজ।

কুতুপালং ক্যাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে আব্দুল হাফিজ বলেন: সু চি যদি সত্য বলে থাকেন তাহলে মানবশূন্য হয়ে পড়া রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের যেতে দেয়া হোক। তারা গিয়ে দেখে আসুক যে সু চি’র সেনাবাহিনী কীভাবে গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দিয়ে কীভাবে মানুষগুলোকে বাড়িছাড়া করেছে।

যদি আমরা মিথ্যা বলে থাকি তাহলে বিশ্ব যদি আমাদের সমুদ্রে ধাক্কা দিয়ে মেরে ফেলতে চায় তার জন্যও আমরা তৈরি আছি।

এর আগে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চি বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি আন্তর্জাতিক সমালোচনায় ভীত নন।

গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো দেয়া টেলিভিশন ভাষণে তিনি তিনি বলেন, তার দেশ সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমালোচনা ও নিন্দায় ভীত নয়। অধিকাংশ মুসলিম মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে যায়নি এবং রাখাইনে সহিংসতা থেমে গেছে।অং সান সু চি-রোহিঙ্গা-মিয়ানমার

চলতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তার পক্ষে আপাতত যাওয়া সম্ভব নয় বলেই এই ভাষণটি দিচ্ছেন বলে সু চি জানান। বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তার সরকার কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানানোই এই ভাষণের উদ্দেশ্য।

ভাষণের শুরুতেই সাম্প্রতিক সহিংসতার জন্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মিকে (আরসা) দায়ী করে নোবেল বিজয়ী সু চি সকল ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অনৈতিক সংঘাত-সন্ত্রাসের নিন্দা জানান।

সু চি দাবি করেন, সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে নিরাপত্তা অভিযান পরিচালনাকালে মানবাধিকার রক্ষায় সব নিয়ম-নীতি কঠোরভাবে পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জনগণের সম্পত্তি রক্ষা এবং নিরপরাধ মানুষের হয়রানি-নির্যাতন বন্ধে সব ধরণের পদক্ষেপের ঘোষণা দেন তিনি।

সব ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতি নিন্দা জানিয়ে সু চি বলেন, রাখাইনে নিপীড়ন-নির্যাতনের জন্য যে-ই দায়ী হোক, তাকেই বিচারের আওতায় আনা হবে।

বাংলাদেশ সময় : ১৫০৮ ঘণ্টা, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এ