করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বর্তমান সরকার সমন্বয়হীন: সৈয়দ এমরান সালেহ

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স মন্তব্য করে বলেছেন যে, বৈশ্বিক মহামারি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বর্তমান সরকারের পদক্ষেপ সমন্বয়হীন, অপরিকল্পিত, অদূরদর্শী ও কাণ্ডজ্ঞানহীন। এবার সরকার অনেক সময় হাতে পেলেও পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় গতবারের মতোই হ-য-ব-র-ল অবস্থা।

বুধবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

প্রিন্স বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণা করেছে। লকডাউনের দুই দিন অতিবাহিত হয়েছে। কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশে আরও বেশি শক্তি নিয়ে আক্রমণ করেছে। মূলত গত মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ বাড়লেও সরকারের উদাসিনতা ও ব্যর্থতায় করোনা মোকাবিলায় কোনো কার্যকর ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেই।

তিনি বলেন, মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়ার সময় থেকেই বিশেষজ্ঞ মহল সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে কার্যকর ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করলেও সরকার মূলত উৎসব আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে। সরকারের মন্ত্রীরা লকডাউন বললেও উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন—এটি লকডাউন নয়, কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। লকডাউন নিয়ে সরকারের মধ্যে দুই রকম বক্তব্যে চরম সমন্বয়হীনতারই প্রমাণ মেলে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বাস্তবতা হলো সরকারি অব্যবস্থাপনায় লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞা কোনটাই মাঠ পর্যায়ে কার্যকর হচ্ছে না। বরং সরকারের পরস্পরবিরোধী পদক্ষেপে মানুষ করোনা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। সর্বত্রই লেজেগোবরে অবস্থা। নানা দুর্ভোগে জনগণ।

আলাপ-আলোচনার পরিবর্তে গুলি করে লাশ ফেলে জনবিক্ষোভকে সরকার দমন করতে চায় উল্লেখ করে প্রিন্স বলেন, সরকারের একজন পদস্থ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার কর্মচারী কর্তৃক এক দোকান কর্মচারীকে অমানবিক নির্যাতনের পেক্ষিতে ফরিদপুরের সালথায় গণবিক্ষোভ হলেও সেখানে গুলি করে মানুষ হত্যা ও চার হাজার মানুষকে আসামি করে মামলা দায়েরের ঘটনায় এটি পরিষ্কার যে, সরকারের পায়ের নিচে শেষ মাটিটুকুও আর অবশিষ্ট নেই।

তিনি বলেন, আমি বিএনপির পক্ষ থেকে সালথার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি, তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে ঘটনার জন্য দোষী কর্মকর্তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। পাশাপাশি গুলিতে নিহত ব্যক্তির বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকাহত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। নিহতের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।

একইসঙ্গে জনগণকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা ও নিজের জীবন রক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান এমরান সালেহ প্রিন্স।