নির্বাচনে আসুন, যথাসময়ে সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন হবে: ফখরুলকে ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা কতটুকু, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন দিয়ে দেখতে বলেছেন। তাঁকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনে আসুন, যথাসময়ে নির্বাচন হবে সংবিধানসম্মতভাবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনেই প্রমাণ হবে জনগণ ইতিবাচক রাজনীতির দিকে, নাকি নেতিবাচক রাজনীতির দিকে।’ আজ বুধবার সকালে ওবায়দুল কাদের তাঁর বাসভবন থেকে ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জনগণের মত প্রকাশের সর্বোত্তম মাধ্যম হচ্ছে নির্বাচন, আর সেই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে অধিকতর গণতান্ত্রিক ও আধুনিক করার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে।’

বাংলাদেশের জনগণ কি উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবে, নাকি লুটপাটের পক্ষে রায় দেবে—এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে বলেন, ‘দেশে যে উন্নয়নের জোয়ার বইছে, মানুষ কি উন্নয়ন আর অর্জনকে ভোট দেবে, নাকি দুর্নীতিকে ভোট দেবে?’ সারাক্ষণ নির্বাচনের আতঙ্কে ভুগতে থাকা বিএনপি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার ভয়েই আগেভাগে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ কথা-সে কথা বলছেন বলে মত প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।

নির্বাচনকালীন সরকার নিরপেক্ষ হলে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ নাকি দৃশ্যমান হবে—মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের নিরপেক্ষতার কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপনাদের দৃষ্টিতে নিরপেক্ষতার মানদণ্ড কী, তার প্রমাণ আপনারা ক্ষমতাসীন হয়ে বারবার দেখিয়েছেন।’

বিএনপির নেত্রী এক সময় বলেছিলেন, “দেশে শিশু আর পাগল ছাড়া কেউই নিরপেক্ষ নয়”। দেশবাসী জানে, যতক্ষণ বিএনপির ক্ষমতা দখলের পথ নিরাপদ না হবে, নির্বাচনে জেতার গ্যারান্টি না পাবে, তত দিন তাদের নিরপেক্ষতার মানদণ্ড নিশ্চিত হবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘বিএনপির যেকোনো উপায়ে নির্বাচনে জয়ের নিশ্চয়তা এবং পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারার মানসিকতাই এখন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রধান অন্তরায়।’

জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপির রাজনীতি ক্ষমতা দখলের রাজনীতি—এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ক্ষমতার প্রশ্নে তাদের কাছে স্বৈরতন্ত্র ও গণতন্ত্র সবই সমান। ষড়যন্ত্রের মন্ত্র ও ক্ষমতার তন্ত্রে বিভোর বিএনপির এ দেশের গণতন্ত্র, জনমত, নির্বাচন এবং রাজনীতির অর্থবহ ও কল্যাণকর কোনো পন্থাতে আস্থা ছিল না, এখনো নেই।’

আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রকাশিত জনগণের মতামতের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার শ্রদ্ধাশীল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণই আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস।’

দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ দেশে এ যাবৎ নির্বাচনব্যবস্থা যতটুকু উন্নতি হয়েছে, বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা পর্যন্ত আওয়ামী সরকারই এই উন্নতি করেছে। শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করেননি, বরং অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে শৃঙ্খলমুক্ত করেছেন।’

দেশে গণতন্ত্র আছে বলেই বিএনপির নেতারা রাত-দিন সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছেন, মিডিয়ায় ঝড় তুলছেন, সংসদে আনুপাতিক হারের চেয়ে বেশি সময় পাচ্ছেন, বক্তব্য দিচ্ছেন পার্লামেন্টে ও পার্লামেন্টের বাইরে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি থেকে গণতন্ত্র শিখতে চা না, বিএনপির গণতন্ত্রের মূলে রয়েছে জনগণের অধিকার হরণ, ভোটারবিহীন নির্বাচন, হ্যাঁ-না ভোট, সোয়া ১ কোটি ভুয়া ভোটার, আগুনসন্ত্রাস আর দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর শেখ হাসিনা সরকারের জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় বিএনপির নেতাদের বুকে বিষজ্বালা বেড়েই চলেছে, আর এ থেকেই হতাশায় ভুগতে থাকা বিএনপির নেতারা আবোলতাবোল বলছেন।’