ছাত্রদের উপদেষ্টা করাটা বিরাট ভুল হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ।
রোববার (১ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ দলের উদ্যোগে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
হাফিজউদ্দিন বলেন, আমাদের যে ছাত্রসমাজ আছে তাদের উচিত লেখাপড়া শেষ করে নিজেদের শিক্ষিত করে নিজ নিজ পেশায় আত্মনিয়োগ করা। রাজনীতি করার জন্য উন্মুক্ত দরজা আপনাদের আছে। সার্টিফিকেট নিয়ে আসেন, তারপর রাজনীতি করুন। আপনারা আগামীদিনের প্রধানমন্ত্রী-প্রেসিডেন্ট হন। কিন্তু এখন বারবার তদবির করে, মবোক্রেসি করে সচিবালয় হাজির হয়ে অটোপাসের দাবিতে হুমকি দেন যে, আপনাদের ডিগ্রিটা দেন; এটা আপনাদের জন্য সম্মানজনক নয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে এই লড়াকু ছাত্রদের ভুল পথে পরিচালিত করেছে বর্তমানের এই উপদেষ্টা পরিষদ। এই উপদেষ্টা পরিষদ ছাত্রদের লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছে। দু-তিনজন যারা (ছাত্র) ছিলেন উপদেষ্টা পরিষদে মন্ত্রীর মর্যাদায়, তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। তারা চেয়ারে বসার পর তাদের আত্মীয়-স্বজনরা তার মন্ত্রণালয়ে লাইসেন্স করা শুরু করেছে। এতে দেশের ক্ষতি হলো, তাদের ক্ষতি হলো।
হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই ছাত্রদের উপদেষ্টা করাটা বিরাট এক ভুল হয়েছে। তারা যে রাজনৈতিক দলটা গড়েছে এটি কিন্তু আগামীদিনের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ হতে পারতো। তারা যদি দল সৃষ্টি করে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতো, রাজনীতিতে সুবাতাস বইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতো তাহলে তাদের একটা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ হতো। কিন্তু অল্প বয়সে এই মন্ত্রিপরিষদে ঢুকিয়ে দিয়ে তাদের নষ্ট করে দেওয়া হলো।
তিনি আরও বলেন, হাসিনার শাসনামলে এই দেশ ভারতের একটি রাজ্যে পরিণত হয়েছে। আমি এই দেশের ছাত্রদের এবং সাধারণ নাগরিকদের অভিনন্দন জানাই। জীবনের বিনিময়ে দেড় হাজার ছাত্র, যুবক, সাধারণ মানুষের জীবনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আবার মুক্ত হয়েছি। এই যুদ্ধে প্রতিটি মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। একটি নবগঠিত রাজনৈতিক দল বলার চেষ্টা করে তারা এ দেশকে আবার নতুন করে স্বাধীন করেছে।
‘আবার একটি রাজনৈতিক দল যারা একাত্তরের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, তারা বলতে চায় একাত্তরে আমরা নাকি ভুল করেছিলাম। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে ’৭১ এ ভুল করেছিলাম? এই ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হবো এটা কখনো চিন্তাও করিনি। যেই বীররা ’৭১ সালে বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, যারা যুদ্ধের মাঠে ছিল না তারা তো এটি অবলোকন করেনি, বুঝতেও পারেনি, তাই আজ এ ধরনের কথা বলছে।’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ ভালো লাগে না, তাই সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা আকাশে বাতাসে বলে বেড়াচ্ছে। ’৭২ এর সংবিধান ছুড়ে ফেলার কথা বলছে। সংবিধান তো যে কোনো নির্বাচিত সরকারই পরিবর্তন করতে পারে। আমূল পরিবর্তন করতে পারে। কিন্তু একাত্তরের গন্ধ আছে, একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, এজন্য একাত্তরের কোনো কিছুই এখানে অনেকের ভালো লাগে না।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।