অপরাজনীতি থেকে দূরে থাকতে বিএনপি থেকে বেড়িয়ে আসার কথা জানিয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরী। বলেছেন, ‘অপরাজনীতির প্রস্থান ও নতুন অধ্যায় তৈরি করা কোনো ঘটনা নয়, এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে আরও চালিত করতে হবে।’
সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন সাবেক বিএনপি নেতা। জাগো বাংলা ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের আয়োজনে এই গোলটেবিলের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘নির্বাচন-২০১৮ : অপরাজনীতির প্রস্থান ও নতুন অধ্যায়ের সূচনা’।
এই নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই বিকল্পধারায় যোগ দেন শমসের মবিন চৌধুরী। বছর তিনেক আগে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণার আগে তিনি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান যিনি মূলত আন্তর্জাতিক সম্পর্কের দিকটি দেখতেন।
শমসের মবিন বলেন, ‘শুধু চেতনা নয়, নৈতিক মূল্যবোধ হিসেবে নিতে হবে। তবেই সামনে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী চেতনার অপশক্তিকে আশ্রয় দিতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের অনেক লড়াকু সৈনিকও হেরে গেলেন গত ৩০ তারিখের নির্বাচনে।’
অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘তারা (ঐক্যফ্রন্ট) জানতেন ভোটের মাধ্যমে তারা জিততে পারবেন না। জনগণ তাদের অগ্রাহ্য করবে। বিপুল ভোটে তারা পরাজিত হবে। কিন্তু চেষ্টা করলে ২০/৩০টা আসন পেতে পারতেন। কিন্তু তারা সে চেষ্টাও করেননি। টাকা পয়সাও খরচা করেননি।’
‘নির্বাচনে অনিয়মের কথা বলা হয়েছে। এইবার নির্বাচনে বহু দেশের অবজারভার (পর্যবেক্ষক) এসেছিলেন। নেপাল থেকে, ভারত থেকে, ওআইসি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে এসেছিলেন। কেউ কিন্তু মৌলিক অনিয়মের কোনো কথা বলেননি। ছোটখাটো দুই একটি ঘটনা ঘটেছে।’
‘পৃথিবীর কোনো দেশেই একশ ভাগ অনিয়মহীন নির্বাচন হয় না, কোথাও হয় না। এমনকি যুক্তরাজ্যের মতো দেশেও হয় না, এখনও হয় না। সুতরাং একেবারে একশত ভাগ ধোয়া তুলশিপাতার নির্বাচন হবে, এটা আশা করা যায় না। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে এত নিষ্কলুষ নির্বাচন, এত প্রচ্ছন্ন নির্বাচন আমি আগে কখনও দেখিনি, অনেক অবজারভারই দেখেননি।’
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধর্ষণের ঘটনাটি রাজনৈতিক নয় বলেও দাবি করেন বিচারপতি শামসুদ্দিন। বলেন, ‘ওই ধর্ষণের ঘটনায় রাজনীতির সম্পর্ক কিন্তু খুবই কম। মহিলা সমিতির দুইজন ইতোমধ্যে ঘুরে এসেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনাটি নেহায়েত ব্যক্তিগত কারণে ঘটেছে।’
ওই ধর্ষণের ঘটনায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত যে নেতার নাম এসেছে তিনি আগে বিএনপি করতেন বলেও দাবি করেন শামসুদ্দিন। বলেন, “তিনি (অভিযুক্ত ব্যক্তি) অতীতে বিএনপিতে ছিলেন, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে জয়েন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের অত্যন্ত নিম্নস্তরের নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো সরকার ওই ঘটনায় ‘আউট অব দ্য ওয়ে’তে পদক্ষেপ নিয়েছেন। ইতোমধ্যে নয় জনকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। আমিও চাই তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।’
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আব্দুল মান্নান চৌধুরী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মো. আলী সিকদার, সাংবাদিক সুভাষ সিংহ রায় প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএস






