আয়াক্স রূপকথার ইতি ঘটিয়ে প্রথমবার ফাইনালে টটেনহাম

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের চলতি আসরে কি দুর্দান্তই না খেলছিলো নেদারল্যান্ডসের ক্লাব আয়াক্স! ডি লিট, ফন ডি বিক, হাকিম জিয়েচ, ডুসান ট্যাডিচদের মতো তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দলটি সম্ভাবনা জাগিয়েছিল নতুন করে আয়াক্স রূপকথা লেখার।

কিন্তু তা আর হতে দিলো না ইংলিশ ক্লাব টটেনহাম হটস্পার। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে আয়াক্সকে ৩-২ গোলে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসের প্রথমবারের মতো ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে মাউরিসিও পচেত্তিনোর দল।

প্রথম লেগে টটেনহামের মাঠ থেকে ১-০ গোলের জয় নিয়েই ফিরেছিল আয়াক্স। দ্বিতীয় লেগটি ঘরের মাঠে হওয়ায় তাদের ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো উজ্জ্বল। কিন্তু লুকাস মউরার হ্যাটট্রিকে আয়াক্সের মাঠে ৩-২ গোলে জিতেছে টটেনহাম।

ফলে দুই লেগ মিলে খেলার ফলাফল দাঁড়ায় দুই দলেরই ৩-৩ গোল। কিন্তু প্রতিপক্ষের মাঠে ৩টি গোল করে এগিয়ে থাকায় \’এওয়ে\’ গোলের সুবিধায় ফাইনালে নিজেদের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলে টটেনহাম। আগামী ২ জুন প্রথম প্রহরে ফাইনাল ম্যাচে লিভারপুলের মুখোমুখি হবে তারা।

যার ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো ‘অল ইংলিশ’ ফাইনাল দেখতে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্ব। এর আগে ২০০৭-০৮ আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও চেলসি। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
\"\"

প্রথম লেগের মতো ঘরের মাঠে দ্বিতীয় লেগেও আধিপত্য বিস্তার করেই শুরু করেছিল আয়াক্স। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই দলকে প্রথম গোল এনে দেন অধিনায়ক ম্যাথিজ ডি লিট। কর্ণার থেকে উড়ে আসা বলে সরাসরি হেডে গোলটি করেন তিনি।

দুই লেগ মিলে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়া টটেনহাম গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে পড়ে। কিন্তু বেশ কয়েকটি সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তারা। উল্টো ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে ফন ডি বিকের পাস থেকে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেন হাকিম জিয়েচ।

ম্যাচের প্রথমার্ধেই দুই লেগ মিলে ৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ায় প্রায় দুই যুগ পর চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতার সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হয় আয়াক্সের। কিন্তু ম্যাচের নাটকীয়তার তখনো অনেক বাকি। যার পুরোটাই হয় দ্বিতীয়ার্ধে।

পাল্টা আক্রমণ থেকে নিজেদের প্রথম গোলটি পায় টটেনহাম। বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচের ৫৫তম মিনিটে ডেলে আলির দুর্দান্ত এক পাসে দারুণ ক্ষিপ্রতায় ব্যবধান কমান ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস মউরা।

মিনিট চারেক পর দলকে সমতায় আনার কাজটিও করেন তিনি। তবে এতে পান ভাগ্যের সহায়তা। ফার্নান্দো লরেন্তের জোরালো শট কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন আয়াক্স গোলরক্ষক। কিন্তু ফিরতি বল পেয়ে যান মউরা। ফাঁকায় গিয়ে বা পায়ের শটে বল জালে জড়ান তিনি।

ম্যাচে চলে আসে ২-২ গোলের সমতা। তবে প্রথম লেগের গোলে তখনো দুই লেগ মিলে এগিয়েই ছিলো আয়াক্স। মনে হচ্ছিলো সেই গোলের কল্যাণেই হয়তো ফাইনালে পৌঁছে যাবে তারা। আস্তে আস্তে করে শেষের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো ম্যাচ।

নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ করে ইনজুরি সময়েরও ৫ মিনিট তখন শেষ। ঠিক তখনই আয়াক্সের মাঠের সমর্থকদের বুকের মধ্য দিয়ে যেন বুলেট চালান মউরা। এবারও ডেলে আলির পাস থেকে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়ান তিনি, পূরণ করেন হ্যাটট্রিক, ফাইনালে পৌঁছে দেন নিজের দলকে।

Scroll to Top