জানেন কি ইসরাইলকে কত অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসরাইলের জন্য কি পরিমাণ সাহায্য যায়, এ নিয়ে নিজ দলের ভেতরেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে পড়েছেন। সম্প্রতি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর এই চাপ বেড়েছে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে বাম ঘরানার রাজনীতিক সেনেটর বার্নি স্যান্ডারস্‌ বলেছেন, ইসরাইলকে সহায়তা দেয়া অর্থ কোথায় কিভাবে খরচ হচ্ছে, সেদিকে ‘গভীর দৃষ্টি’ দিতে হবে।

ইসরাইল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কী পায় এবং তা কোন কাজে লাগায়? : ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন (৩৮০ কোটি) ডলার সহায়তা দিয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামার শাসনামলে ইসরাইলকে দীর্ঘমেয়াদী যে সহায়তার কথা ছিল তার অধীনেই এই সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এর পুরোটাই সামরিক সাহায্য ছিল।

২০১৬ সালে ইসরাইলের সঙ্গে এক চুক্তি সই করেন বারাক ওবামা। চুক্তির অধীনে ২০১৭-১৮ সাল থেকে পরবর্তী ১০ বছর ইসরাইল ৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা পাবে। আগের দশ বছরের তুলনায় এই অর্থ সহায়তার পরিমাণ প্রায় ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও ইসরাইলে নতুন অভিবাসীদের পুনর্বাসনে ৫০ লাখ ডলার সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যে কোনো দেশের ইহুদিরা ইসরাইলে গিয়ে থাকতে চাইলে তাদের স্বাগত জানানোর নীতি দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে দেশটিতে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর অর্থ কিভাবে খরচ করে ইসরাইল? : অত্যাধুনিক একটি সামরিক শক্তিধর দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বছরের পর বছর ইসরাইলকে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র ক্রয়ের জন্য তহবিল যোগানো হচ্ছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইসরাইল ৫০টি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনেছে। এসব যুদ্ধবিমান দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। প্রতিটি বিমানের দাম প্রায় ১০ কোটি ডলার। ইতোমধ্যে ইসরাইল এসব বিমানের ২৭টি পেয়ে গেছে এবং বাকিগুলোর অপেক্ষায় রয়েছে।

এছাড়া গত বছর যুক্তরাষ্ট্রর কাছ থেকে ২৪০ কোটি ডলার ব্যয়ে ৮টি কেসি-৪৬ এ বোয়িং ‘পেগাসাস’ বিমান কিনে ইসরাইল। এসব বিমান থেকে আকাশে এফ-৩৫ বিমানে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা যায়।

ইসরাইলকে কেন এত সাহায্য দেয় যুক্তরাষ্ট্র? : বেশ কিছু কারণেই ইসরাইলকে এত সাহায্য দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে একটি ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। ১৯৪৮ সালে ইহুদিদের জন্য ইসরাইলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসরাইলের প্রতি অব্যাহতভাবে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রর।

এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবেও বিবেচনা করে অভিন্ন এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি পারস্পরিক প্রতিশ্রুতি রয়েছে তাদের। মার্কিন কংগ্রেসের রিসার্চ সার্ভিসের মতে, এ সম্পর্ক অব্যাহত রাখার জন্য এবং জোরদার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রর এই সহায়তা বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।

যুক্তরাষ্ট্রর প্রশাসন এবং অনেক রাজনীতিকই দীর্ঘদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলকে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবেও বিবেচনা করেন।

সংবাদ সূত্রঃ বিবিসি