বাংলার ‘মুকুটহীন সম্রাট’ এর আজ মৃত্যুবার্ষিকী

নবার সিরাজউদ্দৌলা সিনেমা ছাড়াও আনোয়ার হোসেনের জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল বেশ কিছু সিনেমা। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাঁচের দেয়াল, বন্ধন, রূপবান, পরশমনি, জঙলী ফুল, আনোয়ারা।

সমৃদ্ধ অভিনয় জীবনে আনোয়ার হোসেনের প্রাপ্তি কম নয়। দর্শকদের অকৃত্রিম ভালোবাসার পাশাপাশি তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মাননাও অর্জন করেছেন। দেশের ইতিহাসে প্রথম অভিনেতা হিসেবে ১৯৮৮ সালে তিনি একুশে পদক লাভ করেছিলেন। এছাড়া জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর তিনিই শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে পুরস্কারটি তিনি লাভ করেন ‘লাঠিয়াল’ সিনেমার জন্য।

এরপর তিনি ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘দায়ী কে?’ সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান আনোয়ার হোসেন। ২০১০ সালে তাকে দেয়া হয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আজীবন সম্মাননা। এছাড়াও আনোয়ার হোসেন দুইবার বাচসাস পুরস্কার এবং পাকিস্তানের নিগার পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার-সম্মাননা লাভ করেছেন।

চলচ্চিত্র অভিনয়ের পাশাপাশি আনোয়ার হোসেন পরিচিত ছিলেন একাধারে একজন শক্তিশালী মঞ্চ অভিনেতা, টেলিভিশন অভিনেতা ও বেতার অভিনেতা হিসেবে। অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নিলেও, এ পেশা থেকে অবসর নেন ২০০৬ সালে। আর এ অবসর হয়তো ছিলো অসুস্থতার কারণে।

অভিনয় করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেও, শেষ বয়সে তাকে কিছুই দেয়নি সেই অভিনয়। অসুস্থ থাকা অবস্থায় শেষবারের মতো একবার ঘুরতে গিয়েছিলেন নিজের প্রিয় কর্মস্থল বিএফডিসিতে। ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এ কিংবদন্তী অভিনেতা। তবে শিল্পীরা চলে গেলেও থেকে যায় তাদের কর্ম। আর আনোয়ার হোসেনও বাংলার মানুষের মনে আজীবন বেঁচে থাকবেন মুকুটহীন সম্রাট হিসেবেই।

Scroll to Top