পুড়ছে তুমব্রু সীমান্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্প, আশেপাশে আতঙ্ক

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখায় আগুন দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসতঘরে।

আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকাল ৫টার দিকে এই আগুন দেওয়া হয়। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা ও ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিকাল ৫টার দিকে তুমব্রু শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আগুন জ্বলছে। ওই ক্যাম্পে আশ্রয়রত রোহিঙ্গাদের অনেকেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেক রোহিঙ্গা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলে গেছেন। গোলাগুলির শব্দ আগের চেয়ে বেড়েছে। স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে রয়েছে।’

এদিন দুপুরে তুমব্রু সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক যুবক মারা গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ আরেকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত যুবকের নাম হামিদ উল্লাহ ও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মুহিব উল্লাহ।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘তুমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখা থেকে ওই দুজনকে উদ্ধার করে কুতুপালং ক্যাম্পের পাশে এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হামিদ উল্লাহকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। আরেক গুলিবিদ্ধ মুহিব উল্লাহকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘কী কারণে বা কেন তারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন তা এখনও বলা যাচ্ছে না। দুজনের শরীরে বিশেষ রঙয়ের পোশাক রয়েছে। তারা মিয়ানমারের কোনো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

নিহত হামিদ উল্লাহর মরদেহ এদিন বিকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। একই সময়ে এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গুলিবিদ্ধ মুহিব উল্লাহকে। ক্যাম্পে এখনও থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।

এর আগে সকাল ৬টার পর থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়ার শূন্যরেখায় দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয় বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা।

তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিষয়টি স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। গোলাগুলি এখনও অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাটি শূন্যরেখায় হওয়ায় আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সেখানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশসহ (বিজিবি) সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ার নেই। তবে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’

কাদের মধ্যে এই গোলাগুলি হচ্ছে তা নিশ্চিত করেননি ইউএনও। তবে স্থানীয়দের ধারণা, মিয়ানমারের দুই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মধ্যে ওই গোলাগুলি হচ্ছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘সকাল থেকে শূন্যরেখায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। কী হচ্ছে সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। মিয়ানমারের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলি চলছে বলে জেনেছি। স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে রয়েছেন।’