জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশীরা। প্রয়োজনে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কোটি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সাথে নিয়ে আবারো রেমিট্যান্স শাট ডাউন কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দেন তারা।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্যারিসের সন্নিকটে পন্তার একটি রেস্তোরাঁয় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন তারা।
শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির বিপ্লবী জীবনের ওপর আলোচনা এবং তার শাহাদাত কবুল এর জন্য এ দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শহীদ ওসমান হাদি সমর্থক ফোরাম।
ফ্রান্সে বাংলাদেশ কমিউনিটির সিনিয়র সিটিজেন ও সাংবাদিক আবদুল মান্নান আজাদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
ওসমান হাদী সমর্থক ফোরামের আহ্বায়ক ও প্রবাসী সিনিয়র সাংবাদিক এফবিজেএ সহ-সমন্বয়ক মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফোরামের সদস্য সচিব আজাদী আবুল বাশার (হেলাল)।
আলোচনা করেন ফ্রান্সে বসবাসকারী বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সংগঠন ‘ফ্রান্স বাংলাদেশ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন’ (এফবিজেএ) সমন্বয়ক মোহাম্মদ মাহবুব হোসাইন, এক্টিভিস্ট ইনফ্লুয়েন্সার ও জিয়া সাইবার ফোর্স (Zcf) এর সাবেক সহ সভাপতি মীর জাহান, নজরুল গবেষক খোরশেদ আলম পাটোয়ারী, সামাজিক গণমাধ্যম ভিত্তিক সংগঠন বিসিফ’র সাধারণ সম্পাদক নজমুল কবির, নাগরিক পরিষদ, ফ্রান্সের সদস্য সচিব ইমরান আহমেদ, গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্ট মনোয়ার পাটোয়ারী, এফবিজেএ মুখপাত্র মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ডায়াসপরা- বিএনডিএ আহ্বায়ক মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, দ্য জার্নাল সম্পাদক ও এইড পয়েন্ট এর প্রতিষ্ঠাতা ফয়সাল আহমেদ, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা কাজী নজরুল সেন্টার ফ্রান্সের সভাপতি কবি সোহেল আহমেদ, কবি চৌধুরী রেজাউল হায়দার, তরুণ সমাজ কর্মী তানভীর ওয়াদূদ, এনসিপি সদস্য সচিব শাফওয়াত হোসেন (রাব্বি রাজ), এক্টিভিস্ট আজিমুল হক খান, সাংবাদিক সরদার হাসান ইলিয়াস তানিম, মো. হিজবুল্লাহ। শহীদ ওসমান হাদির জীবনী তুলে ধরেন সাবেক ছাত্রনেতা ও কারু কুঠি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম।
সভার সভাপতি মান্নান আজাদ বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদী শকুনদের থাবা থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে হাদির দেখানো পথে লড়াইয়ের কোনো বিকল্প নেই।’
আধিপত্য বাদী সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে বাংলাদেশের সংস্কৃতি বিলীন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক পতনের মূল কারণ নৈতিকতা ও সংস্কৃতির অবক্ষয়। ওসমান হাদী এ কারণেই সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে দেশের পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন।
এফবিজেএ সমন্বয়ক মোহাম্মদ মাহবুব হোসাইন বলেন, ‘সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদ রুখতে হাদির দেখানো পথ আমাদের আজীবন দিশা দেখিয়ে যাবে।’ তার চিন্তার ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও হত্যাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতারের আহ্বান জানান তিনি।
নিজের সঙ্গে শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদির স্মৃতিচারণ করে অ্যাক্টিভিস্ট মনোয়ার পাটোয়ারী বলেন, ‘ওসমান হাদী এ ভূখণ্ডে রাজনৈতিক আধিপত্যবাদবিরোধী সংগ্রামের এক মহান জেনারেল। তার সৈনিক হয়ে আমরা এ লড়াই চালিয়ে নেব।’
শহীদ ওসমান হাদী সমর্থক ফোরামের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান শহীদের চিন্তার বাস্তবায়ন ও তার স্মৃতি রক্ষায় ফ্রান্সসহ সারা বিশ্বে শহীদ ওসমান হাদী কালচারাল সেন্টার বা ইনকিলাব মঞ্চ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, শহীদ ওসমান হাদী দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে বাংলাদেশের সকল মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। রাজনৈতিক দৈন্যতার কারণে কিছু বিকারগ্রস্ত রাজনৈতিক দল ও তাদের সমর্থকরা ওসমান হাদিকে যথাযথ সম্মান দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ইতিহাস তাদের বিচার করবে। শরিফ ওসমান বিন হাদী হত্যা প্রকৃত খুনিদের বিচার ও তার চিন্তার ফ্যাসিবাদ মুক্ত ইনসাফের বাংলাদেশ বিনির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তারা।
দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিশিষ্ট ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও এমসি ইন্সটিটিউট, ফ্রান্সের প্রিন্সিপাল মাওলানা বদরুল বিন হারুন।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম, গবেষক ইকরামুল কবির সালমান, রাজনীতিবিদ রেজওয়ান হিমেল, তের্খ বাংলার সম্পাদক কাওসার আহমেদ, শিক্ষানুরাগী আউয়াল রহমান দ্বীপ, নজরুল গবেষক চৌধুরী রেজাউল হায়দার, ব্যবসায়ী অ্যাক্টিভিস্ট মোহাম্মদ আরাফাত, সাংবাদিক বদরুল বিন আফরুজ, সাংবাদিক ইয়াসির আরাফাত (খোকন), আবু তাহের রাজু, সাইফুল ইসলাম ও মামুন মাহিনসহ প্রমুখ।






