অসামাজিক কার্যকলাপের স্বর্গরাজ্য পান্থকুঞ্জ পার্ক!

ব্যস্ত ঢাকার প্রায় কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান পান্থকুঞ্জ পার্কের। ক্লান্ত পথিকের আশ্রয় ও বিনোদনের জন্য গড়ে তোলা এ পার্ক। সেজন্য নামও দেওয়া হয় পান্থকুঞ্জ (পথিকের কুঞ্জ)। কিন্তু এই পান্থকুঞ্জে এখন ক্লান্ত পথিকের আশ্রয়-বিনোদন কেন্দ্র না। হয়ে উঠেছে অসামাজিক কার্যকলাপের স্বর্গরাজ্য। দিন যতই যাচ্ছে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে বিনোদনের জন্য গড়ে উঠা এই পার্কটি।

ক্লান্ত পথিকের আশ্রয় ও বিনোদনের জন্য গড়ে তোলা এ পার্কটিতে দিন শেষ যখন রাত আসে পাল্টে যায় এর দৃশ্যপট। দেহ ব্যবসা থেকে শুরু করে ছিনতাই, মাদক বিক্রিসহ হেন কোনো অসামাজিক কাজ নেই যে রাতের বেলায় পার্কটিতে হয় না। সন্ধ্যার পর পরই পার্কটির ভেতর কিংবা আশপাশ দিয়ে লোকজন হেঁটে যেতে চান না। আর যদি কেউ মনের ভুলে চলে যান তাহলে নিশ্চিত ছিনতাইকারীদের হাতে। এক কথায় বলা যায়, অসামাজিক কার্যকলাপের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে পান্থকুঞ্জ!

সরেজমিনে প্রথমেই দেখা যায়, পার্কের পাশে সুন্দরবন হোটেলের সামনে পুলিশ ও কয়েকজন পথচারীর ভিড়। তাদের কাছে গিয়ে জানা যায় হাসান নামে একজন পথচারী পার্কের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় কয়েকজন মিলে তার কাছ থেকে ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

তবে পুলিশের ধারণা হাসান পার্কের ভেতরের ভাসমান পতিতাদের সঙ্গে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়ার জন্যই এসেছিলেন। পতিতারা তার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে ধারণা কলাবাগান থানার এসআই মালেকের। সুন্দরবন হোটেলের সামনে থেকে পান্থকুঞ্জ পার্কের দিকে এগোতেই লক্ষ্য করা যায় এক শ্রেণির নারী ও পুরুষের আনাগোনা। এর মধ্যে নারীরা হচ্ছেন পার্কের ভাসমান পতিতা এবং বাকিরা এদের খদ্দের ও দালাল।

পান্থকুঞ্জ পার্কের ভাসমান পতিতা শিল্পী জানান, সে সহ শান্তা রোমা স্মৃতি এই পার্কে অবৈধ দেহ ব্যবসা করেন। তবে তাদের সঙ্গে হিজড়াদের একটি দলও রয়েছে এই কাজে। টাকা ছিনতাইয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে টাকা ছিনতাইয়ের বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। তবে আমাদের যে দালাল মো.আজিজুর ভাই ও তার একটি দল এই ছিনতাই কাজ পরিচালনা করে।

পার্কে চলা অসামাজিক কার্যক্রমের প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করতেই আজিজুর নামের একজন বলেন, এর সঙ্গে সে জড়িত না। তবে তিনি বেশ কয়েক জনের নাম বলেন যারা এই কাজে জড়িত।

কিন্তু রাত ১টায় পার্কের সামনে দলবল নিয়ে কেন ঘুরাঘুরি করছেন এবং জড়িতদের নামই বা তিনি কীভাবে জানলেন এমন প্রশ্ন শুনে আজিজুর আর কোনো কথা না বলে চলে যান। তবে শিল্পীসহ আরও বেশ কয়েকজন পতিতা জানান, খদ্দেররা পার্ক থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় আজিজুর তার দল নিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়।

তবে অভিযোগ রয়েছে যে, পুলিশকে টাকা দিয়েই পার্কে চলে এই সব অসামাজিক কাজ।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, ২৮ অক্টোবর    ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস পি