বরিশালগামী দুই লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষ, উভয় লঞ্চের যাত্রা স্থগিত

ঢাকা থেকে বরিশালে যাত্রী নিয়ে আসার পথে এমভি সুন্দরবন-১০ ও এমভি মানামী নামে দুটি লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটায় ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের মেঘনার ইলিশা লাল বয়া পয়েন্টে এ ঘটনা ঘটে। এতে কোন হতাহতের না হলেও উভয় লঞ্চের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করে সার্ভে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া উভয় লঞ্চের চলাচল স্থগিত করেছে বিআইডব্লিউটিএ। পাশাপাশি পুরো ঘটনার তদন্তের জন্য ঘটনায় ৫ সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিআইডব্লিউটিএ কৃতপক্ষ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় দুটি লঞ্চ পরিদর্শন করেন গঠিত তদন্ত কমিটি।

সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান জানান, ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে তারা বরিশাল যাচ্ছিলেন। মেঘনার ইলিশা লাল বয়া পয়েন্টে গতকাল বুধবার রাতে আড়াইটার দিকে সুন্দরবন-১০ লঞ্চটি পৌঁছায়। এসময় সেখানে পানি কম থাকায় তিনি লঞ্চের গতি কমিয়ে ফেলেন। কিন্তু ওই চ্যানেলের মধ্যে এমভি মানামী লঞ্চ সুন্দরবন-১০ লঞ্চকে দ্রুত গতিতে অতিক্রম করে চরে আটকে যায়। চর থেকে নামানোর জন্য ফুল স্পিডে লঞ্চটিকে পেছনের দিকে সরানো হয়। এসময় সুন্দরবন-১০ লঞ্চের ওপর এমভি মানামী আছড়ে পড়ে। এতে সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাঝ বরাবর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

মানামী লঞ্চের মাস্টার আসাদুজ্জামান এ ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, সুন্দরবন-১০ লঞ্চকে পেছনে যাবার জন্য বার বার অনুরোধ করা হয়। পাশাপাশি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতেও বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই লঞ্চ তার দেওয়া অনুরোধকে গুরুত্ব না দেওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার উভয় লঞ্চ চালিয়ে আজ সকালে বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রী নিরাপদে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঘটনাটি পুরো তদন্তে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নৌপুলিশের প্রতিনিধিসহ নৌপরিবহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা দুটি লঞ্চ পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনে শেষে কমিটির সদস্য ও বিআইডব্লিউটিএ-এর যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) আজমুল হুদা মিঠু সরকার বলেন, ওই ঘটনায় সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাঝামাঝি বাম পাশের অংশ ও মানামী লঞ্চের পেছনের ফ্যান্টারের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি উভয় লঞ্চ কর্তৃপক্ষকেই তা মেরামতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মেরামতের পর সার্ভে কর্তৃপক্ষকে দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে ত্রুটিমুক্ত মনে করলে লঞ্চ দুটি পুনরায় চলাচল করতে পারবে। এর আগ পর্যন্ত লঞ্চ দুটির যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে।