মৌসুমী ফল তরমুজ ‌পিস হি‌সে‌বে কিনে কেজিতে বি‌ক্রি, অস্বস্তিতে ক্রেতারা

মৌসুমী রসালো দেশীয় ফল তরমুজের চাহিদা সবসময় থাকলেও এই রমজানে একটু বেশিই। ইফতারে ধর্মপ্রাণ রোজাদাররা তরমুজই পছন্দ করছেন। তবে এবার মৌসুমের শুরু থেকেই তরমুজের দাম চড়া। অভিযোগ উঠেছে, রাজধানীসহ সারাদেশে সিন্ডিকেট করে তরমুজের দাম বাড়ানো হয়েছে।

সাধারণ ক্রেতা ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসাসীয়রা কৃষ‌কের কাছ থে‌কে তরমুজ ‌কিন‌ছেন পিস হি‌সে‌বে আর বি‌ক্রি কর‌ছেন কে‌জি দ‌রে। কিন্তু কৃষি বিপণন আইন ভে‌ঙে সেই তরমুজ কে‌জি দ‌রে বি‌ক্রি কর‌ছেন। ক্রেতারা সেই তরমুজ প্রতি‌কে‌জি ৫০ থে‌কে ৬০ টাকা দ‌রে কিন‌তে বাধ্য হ‌চ্ছেন। তা‌তে ক‌রে প্রতি‌টি তরমু‌জের দাম গ‌ড়ে ৫০০ টাকা বি‌ক্রি হ‌চ্ছে। যে‌টি তরমুজ ব্যবসায়ীরা কৃষ‌কের কাছ থে‌কে ১০০ থে‌কে ১৫০ টাকায় কি‌নে‌ছেন।

তরমুজের দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে রাজধানীবাসী মনে করছেন, কেজি দরে বিক্রির কারণেই এমন দাম উঠেছে। এতো ভারী একটি ফল ছোট পরিবারের জন্য কিনতে গেলেও ৫ কেজির নিচে হয় না। এর মধ্যে রমজান আর বৈশাখের খরতাপকে কেন্দ্র করে সবুজ তরমুজেও আগুন লেগেছে।

যে আগুনে নিম্মমধ্যবিত্ত তো দূরের কথা, মধ্যবিত্তরাই পুড়ে ছারখার। অথচ দেশজুড়ে চলমান তীব্র তাপদাহে ইফতারের প্রধান উপকরণ হওয়ার কথা তরমুজ। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই তরমুজ এখন রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই সুযোগে বিক্রেতাদের মুনাফা চরমে।

এপ্রিলেও যে তরমুজের কেজি ৩০ থেকে ৪৫ টাকা ছিল এখন তা বাড়িয়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। ফলে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে রমজানে দাম সহনশীল রাখার ঘোষণা দেওয়া হলেও রোজা শুরুর পর সেই প্রতিশ্রুতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে নানান অজুহাত দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়নি। এর ওপর চৈত্রের শুরুতেই প্রচণ্ড গরম পড়তে শুরু করায় বেশি দাম পাওয়ার আশায় পরিপক্ক হওয়ার আগেই মাঠ থেকে তরমুজ তুলে বিক্রি করেছেন কৃষকরা।

তারা বলছেন, এখন আর মাঠে তরমুজ নেই। তাই বাজারে তরমুজের সরবরাহ কমেছে। আর তাই দামও বেড়েছে। আর ‘লকডাউনের’ কারণে দেশের বেশির ভাগ তরমুজ উৎপাদন হওয়া বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে তরমুজ আসতে পারছে না। এজন্য দাম বেশি।

উল্লেখ্য, দেশের বিভিন্ন জেলায় তরমুজ বাড়তি দামে বিক্রি করার অভিযোগ উঠার ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন। ভ্রাম্যমাণ আদলতে অনেক ব্যবসায়ীকে জরিমানার খবর পাওয়া গেছে। পিস হিসেবে তরমুজ কিনে উচ্চমূল্যে কেজিতে বিক্রির অপরাধে বরিশালৈ ১৪ ব্যাবসায়ীকে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।