বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী বিভাগের প্রশাসনিক অঞ্চল নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড থেকে আবাদপুকুর থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়কের কাজ বন্ধ। এরইমধ্যে কয়েক দফা বৃষ্টিতে বেশ কয়েক জায়গায় পানি জমে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি। বিশেষ করে আবাদপুকুর হয়ে কালিগঞ্জ সড়কে বনমালিকুড়ি নামক স্থানে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে চরম বিড়ম্বনাসহ এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছে, জনস্বার্থে সড়কটির দ্রুততম সময়ে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। প্রয়োজনে তারা স্থানীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
জানা গেছে, রাণীনগর-আবাদপুকুর-কালীগঞ্জ ২২ কিলোমিটার সড়কটির প্রশস্তকরণ ও আধুনিকায়ন কাজের জন্য ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করে নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগ। সড়ক ও এর ২৬টি কালভার্ট ও ৪টি সেতু নির্মাণে জন্য মোট ব্যয় ধরা হয় ১০৫ কোটি টাকা। কার্যাদেশের চুক্তি অনুযায়ী সড়কটি নির্মাণ কাজের জন্য সময় দেওয়া হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এর মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কালভার্ট ও সেতুর কাজ শুরু করে। পাশাপাশি সড়কের প্রশস্তকরণ, মাটি ভরাট এবং কার্পেটিংয়ের কাজও শুরু করে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের অনিয়ম, কাজে চরম গাফিলতি ও নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় নওগাঁ সড়ক বিভাগ কয়েক দফা চিঠি দিয়ে সতর্ক করে। এক পর্যায়ে সড়কটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করতে কার্যাদেশের সময়ও বাড়ানো হয়।
বর্ধিত সময়ের মধ্যেও নির্মাণ কাজ শেষ না করায় নানা অনিয়মসহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নওগাঁর সড়ক বিভাগ কার্যাদেশের চুক্তি গত ৩ মে বাতিল হয়। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও অবহেলার কারণে বর্তমানে সড়কটি বেহালে রয়েছে। কোথাও পাথর, কোথাও ইটের খোয়া দিয়ে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কাজ না করায় সড়কের অধিকাংশ স্থানেই সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। ফলে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষকে।
উপজেলার একডালা ইউনিয়নের স্থল গ্রামের পথচারী সুদর্শন কর্মকার বলেন, \’বর্তমানে সড়কটি পানি-কাদায় একাকার হওয়ায় চলাচল করতে খুব অসুবিধা হয়। সড়কটি বেহালে থাকায় যানবাহনে দ্বিগুণ ভাড়াও গুনতে হচ্ছে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, দ্রুত সড়কটি মেরামত করা হোক।\’
নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, \’সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে কয়েক দফা সতর্ক করার পরও তারা নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় বিভিন্ন কারণে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের চুক্তিপত্র বাতিল করা হয়েছে। সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এই কাজের জন্য আবার নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।\’






