১৬ দফা দাবি আদায়ে শাবি শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল, আন্দোলন অব্যাহত

ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ, রোড পেইন্টিং ও গ্রাফিতি করতে দেওয়া, সারা বছর হল খোলা রাখা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে স্বাধীনতাসহ ১৬ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা।

গত ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলনের ১১তম দিনে এসে মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল করেছেন তারা। দাবি আদায় না হলে আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ থেকে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে একটি মশাল মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চেতনা-৭১’র সামনে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।

মিছিল পরবর্তী সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবিগুলো দুইভাবে উপস্থাপন করেছিলাম। ‘আশু দাবি ছিল ৬টি, যার আল্টিমেটামের মেয়াদ শেষ হবে বুধবার। আর দীর্ঘমেয়াদি’ দাবি ছিল ১০টি।

“দাবি আদায়ে আমরা আগামীকাল দুপুর আড়াইটা থেকে গোল চত্তরে গণজমায়েত কর্মসূচী পালন করবো। আমরা আশা করি প্রশাসন আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিবে।”

বুধবারের মধ্যে আল্টিমেটাম বেধে দেয়া শিক্ষার্থীদের আশু দাবিসমূহ হলো- ক্যাম্পাসে সর্বাত্মক গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা, আসন্ন সমাবর্তন উপলক্ষে হল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহার করে বছরে ৩৬৫ দিনই হলগুলো খোলা রাখা, ছেলে ও মেয়েদের হলে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে অযৌক্তিক বৈষম্য ও সময়সীমা প্রত্যাহার করা, ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান বাড়ানো ও দাম কমিয়ে টংগুলোতে ভারি খাবার ব্যবস্থা করা, রাত দশটা পর্যন্ত লাইব্রেরি খোলা রাখা, সংগঠনগুলোকে ভেন্যু বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোন প্রকার অর্থ না নেওয়া ও কক্ষ বরাদ্দের ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ না করা।

আর ২৬ মার্চের পর্যন্ত আল্টিমেটাম বেধে দেয়া দীর্ঘমেয়াদি দাবিসমূহ হলো- পরীক্ষার খাতায় পরিচয় নির্দেশক রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের পরিবর্তে কোডিং সিস্টেমের ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা, শিক্ষার্থীদের আনুপাতিক হারে বাস ও রুট ও ট্রিপ সংখ্যা বৃদ্ধি, জিমনেসিয়ামের কার্যকারিতা ও প্রবেশের যৌক্তিক সময়সীমা বৃদ্ধি, মেডিকেল সেন্টারের সুবিধা বৃদ্ধি, লাইব্রেরিতে বইসহ রিডিংরুমে প্রবেশের সুবিধা, প্রথম ছাত্রীহল ও একাডেমিক বিল্ডিংগুলোর যথাযথ নামফলক ব্যবহার, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন ও হলগুলোর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠগুলো ব্যবহার উপযোগী ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, কেন্দ্রীয় মিলনায়তনের মান উন্নয়ন ও সংস্কার করা।

গত ১৮ নভেম্বর সিন্ডিকেট সভার এক সিদ্ধান্তে সমাবর্তনের সময় ৫ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত হল বন্ধ রাখা হবে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা (২০ নভেম্বর) মানববন্ধনে দাঁড়ালে প্রক্টরিয়াল বডির বাধায় মানববন্ধন পন্ড হয়ে যায়।

এরপর থেকে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ, প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারী আচরণের প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষার্থীরা টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।