ছাত্রীদের ম্যাসেঞ্জারে প্রধান শিক্ষকের আপত্তিকর বার্তা!

এখনই তোমার ঘুম হচ্ছে না এর পর কী হবে আমি তোমাকে নিয়ে ভেগে যাবো। জান আই লাভ ইউ। আমাকে কষ্ট দিও না। আই মিস ইউ। তুমি কি সত্যি আমাকে একটুও ভালবাসো না, এতদিন যদি আল্লাহকে ডাকতাম তবে তিনি সাড়া দিতেন। কিন্তু তুমি সাড়া দিলে না’ ম্যাসেঞ্জারে এমনি আপত্তিকর বার্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের প্রেম নিবেদন করে আসছেন প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী।

হায়দার আলী যশোরের মনিরামপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এভাবে নিজের ব্যবহৃত ফেসবুক আইডির ম্যাসেঞ্জার থেকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীকে তাদের ব্যবহৃত ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করে বার্তা দিয়েছেন।

সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বিদায় নেওয়া এক ছাত্রীর সঙ্গে এমন আপত্তিকর বার্তা দেওয়ায় সে এটি ফাঁস করে দেয়। সোমবার প্রধান শিক্ষকের এহেন কর্মকাণ্ডের বিচার চেয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি স্থানীয় উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফীর কাছে ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী লিখিত আবেদনপত্র দিয়েছে। রবিবার রাত থেকে ছাত্রীদের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জারে প্রধান শিক্ষক হায়দার আলীর আপত্তিকর কথাবার্তার কয়েকটি স্ক্রিনশর্ট ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে সর্বমহলে প্রধান শিক্ষকের অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।

তার এমন আচরণে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও। তারা সন্তানকে স্কুলে পাঠাতেও শঙ্কিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী জানায়, গত আগস্টে তাকে ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর কথাবার্তা লিখলে সে প্রধান শিক্ষকের আইডি ব্লক করে দেয়। অপর এক শিক্ষার্থী বলে, স্যারের এমন কুরুচিপূর্ণ লেখার প্রতিবাদ করলেই বিদ্যালয়ের না আসার হুমকি দিতেন। আরেক শিক্ষার্থী জানায়, সে বিদ্যালয়ের সভাপতি ইউএনও স্যারকে জানানোর কথা বললেই প্রধান শিক্ষক কিছুদিন চুপ হয়ে যেতেন। কিছুদিন পর থেকে আরেকজনের সাথে এমন আপত্তিকর বার্তা দেওয়া শুরু করতেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষক বলেন, হেড স্যারের আইডিতে নাকি মাসখানেক ধরে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই তিনি রবিবার পুরনো আইডি ব্লক করে নতুন আইডি খুলেছেন। আমাদের সেই আইডিতে রিকোয়েস্ট পাঠাতে বলেছেন। এর আগেও চলতি বছরের শুরুতে লিতুনজিরা নামে এক প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন হায়দার আলী।

নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী বলেন, আমি সংস্কৃতিমনা মানুষ। ছাত্রীদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। এটা অনেকে সহ্য করতে পারে না। আমাকে ফাঁসানোর জন্য একটি চক্র আইডি হ্যাক করে এসব কাজ করেছে।

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, ছাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি তদন্ত টিম গঠন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।