‘বিভক্ত’ সিনেট অধিবেশন একাই পরিচালনা করলেন ঢাবি উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান

মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্বিধা-বিভক্ত’ সিনেট অধিবেশন একাই পরিচালনা করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। রবিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

বছরের এমন সময়ের সিনেট অধিবেশন ‘বার্ষিক বাজেট উপস্থাপনে’র জন্য হলেও এতে বাজেট উপস্থাপন করা হয়নি। তবে এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নির্বাহী ফোরাম সিন্ডিকেটে তিন জন সদস্যকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বাজেটবিহীন এই অধিবেশনকে ‘গুরুত্বহীন’ উল্লেখ করে আগেই অধিবেশন বর্জন করেন দুই উপ-উপাচার্য। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইঁয়া এতে যোগ দেননি। ফলে পুরো অধিবেশন কার্যত একাই পরিচালনা করেন উপাচার্য। এতে অংশ নেন ৬৩ জন সিনেট সদস্য।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপাচার্য কর্তৃক সিনেট অধিবেশন আহ্বানের পর থেকেই ‘পছন্দের লোকেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নির্বাহী ফোরাম ‘সিন্ডিকেটে’ নিয়োগ দিতে উপাচার্য তড়িঘড়ি করে অধিবেশন ডেকেছেন-এমন অভিযোগ ওঠে। এর ফলেই সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ এতে যোগ দেননি বলে জানা গেছে। এমনকি ‘আর্থিক বিধি লঙ্ঘন’ ও করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বাজেট প্রস্তুত ও সিনেটে উপস্থাপনের ব্যাপার অক্ষমতা জানিয়ে গত ০৭ জুন উপাচার্যকে চিঠি দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন। ফলে বাজেটবিহীন এই অধিবেশন গুরুত্ব হারায়।

সিনেটের অধিবেশনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের এক বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, এই অধিবেশনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস এন্ড লিবার্টি’-এর প্রস্তাবিত স্ট্যাটিউট অনুসমর্থিত হয়। এছাড়াও অধিবেশনে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট ক্যাটাগরিতে এস. এম. বাহালুল মজনুন, শিক্ষাবিদ হিসেবে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম এবং বিশিষ্ট নাগরিক হিসেবে বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ও ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক এ কে এম শামসুজ্জামান খানকে সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়।

এছাড়া, ফাইন্যান্স কমিটিতে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। বাজেট উপস্থাপন না হওয়ায় সিনেটের এই বার্ষিক সভা আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।

তবে, প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ছাড়াই অনুষ্ঠিত এমন সিনেট অধিবেশনে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ।

বিষয়টি নিয়ে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি সুন্দর হয় নাই। এখানে নৈতিক দুর্বলতা রয়েছে। এটি সকলকে নিয়ে সুন্দরভাবে করা যেত। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলররা কেন যাবে না বা কোষাধ্যক্ষ কেন বাজেট দিল না, এটি নিয়ে আলোচনা করা যেত। এতে তারাও সম্মানিত বোধ করতেন।