মাহির বিচ্ছেদ নিয়ে শবনম ফারিয়ার স্ট্যাটাস

কিছুদিন আগেই দ্বিতীয় স্বামী রকিব সরকারের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে গেলো মাহিয়া মাহির। এরপর থেকে সামাজিক মাধ্যমে তাকে নিয়ে হচ্ছে তুমুল সমালোচনা। মাহির বিচ্ছেদ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে ঠিক তখনই এই নায়িকার পাশে দাঁড়ালেন ছোটপর্দার পরিচিত মুখ, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। মাহির হয়ে এবার মুখ খুললেন ফারিয়া। তার জীবনেও বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে বলেই এর কষ্টটা তিনি অনুধাবন করতে পারেন।

গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন শবনম ফারিয়া। সেখানে নায়িকা মাহির নাম উল্লেখ না করলেও স্ট্যাটাসটি যে তাকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয়েছে সেটি স্পষ্ট।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘পর্দার সামনে কিংবা পেছনে, যে যেই ক্ষেত্রেই কাজ করেন, সবাই মানুষ। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে একভাবেই বানিয়েছেন। যিনি ব্যাংকে কাজ করেন, শিক্ষকতা করেন, কর্পোরেট কাজ করেন কিংবা চিকিৎসক, হাত-পা কাটলে তারা যেমন ব্যথা পান, যারা পর্দার সামনে কাজ করেন তারাও একই রকম ব্যথা পান।’

ফারিয়া আরও লিখেছেন, ‘সবার পৃথিবীতে আসার প্রসেসটা একইরকম, মৃত্যুর পর মুসলিম হলে কবর, অন্য ধর্ম হলে সেই অনুযায়ী শেষকৃত্য হয়। সৃষ্টিকর্তা এমন কোনো নিয়ম রাখেননি যে, অমুক পেশায় কাজ করলে তার কবর হবে না, কিংবা ভিন্ন নিয়মে কবর হবে! পর্দার সামনে কিংবা যেকোনো পেশায় কাজ করলেও সবার একটা ব্যক্তিগত জীবন থাকে, সেখানে অনেক ওঠানামা থাকে। একটা মানুষ কত স্বপ্ন, আশা নিয়ে কারও সঙ্গে সংসার শুরু করে জানেন? যখন কোনো কারণে সংসার করা সম্ভব হয় না সেটা কত কষ্টের জানেন?’

তিনি আরও লেখেন, ‘বিশ্বাস করেন, সবার পরিবার থাকে। পর্দার সামনে যারা কাজ করেন তারা কেউ সমাজ বা পরিবারের বাইরের না। ধরেন, কোনো কারণে আপনার বোনের সংসার টিকল না, আর আশপাশের মানুষ না জেনে তাকে আজেবাজে কথা বলছে, আপনার মায়ের কিংবা আপনার কেমন লাগবে? বিশ্বাস করেন, সবার মা ভাই/বোনদেরও একইরকম লাগে।’

ফারিয়া বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে আমারটা বলতে পারি- ২০২০ পর্যন্ত অভিনয়ই ছিল আমার পেশা, আমার পরিবারের হাজারটা বাধার পরও আমি অভিনয় করেছি। কারণ কাজটা আমি ভালোবাসি। ভালো একটা স্ক্রিপ্ট আসলে এক্সাইটমেন্টে আমার রাতে ঘুম হয় না! যদিও লাস্ট দুই বছর আমি আর আগের মতো কাজ করি না কিংবা বিভিন্ন কারণে খুব কম কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু যখন কাজ করতাম, এইটা আমার কাছে আর ১০টা কাজের মতোই ছিল, সকালে উঠে শুটিংয়ে যেতাম, রাতে বাসায় আসতাম। শুক্র-শনি খুব আর্জেন্ট না হলে শুটিং করতাম না। পার্থক্য একটাই ছিল, অন্যরা ৯-৫টা কাজ করেন, আমাদের ১১-১১টা কাজ করতে হয়।’

তিনি লিখেছেন, ‘এখন কাজের ধরনের জন্য আপনারা পর্দার সামনের মানুষদের চেনেন। কাউকে আপনাদের ভালো লাগে, কাউকে কম ভালো লাগে। কাউকে হয়তো ভালো লাগেই না। এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু একটা মানুষ তার কষ্টের কথা বলছেন, আর আপনার হাতে একটা ফোন আছে, তাই আপনি যা ইচ্ছা বলে দিলেন, এইটা খুব খুব খারাপ একটা প্র্যাকটিস। শুধু শুধু কাউকে কষ্ট দেওয়া একটা অপরাধের সমান।’

সবশেষে ফারিয়া এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করে লেখেন, ‘এসব আর করবেন না প্লিজ, কারো কষ্ট কমাতে না পারলে কষ্ট বাড়ানোর কাজে ভূমিকা রাখবেন না। বিশ্বাস করেন, কেউ ইচ্ছা করে কারো সংসার ভাঙে না! যে যেই পেশাতেই থাকেন সবাই স্বামী/সন্তান নিয়ে সুখে থাকতে চান।’

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রাকিবকে বিয়ে করেন মাহি। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। তাদের ঘরে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মাহমুদ অপুকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন মাহি। তার সঙ্গেও পাঁচ বছর সংসার করার পর তাকে ডিভোর্স দেন এই অভিনেত্রী।

অন্যদিকে, ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি চাকরিজীবী হারুন অর রশীদ অপু। বিয়ের ঠিক এক বছর ৯ মাসের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে শবনম ফারিয়ার। বর হারুন অর রশীদ অপুকে ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর ডিভোর্স দেন তিনি। দুজনের সম্মতিতেই এই বিচ্ছেদ হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী।