mad max

বাড়ি থেকে পালিয়ে স্বপ্নের দেখা! ফিউরিওসাও বাঁচতে চায়

পৃথিবীতে পরিবেশ বিপর্যয় নেমে আসার পর অল্পবয়সী মেয়ে ফিউরিওসাকে ঘটনাক্রমে ছিনিয়ে নিয়ে যায় লুটেরা বাহিনী। গ্রিন প্লেস অব মেনি মাদারস থেকে ফিউরিওসার জায়গা হয় নারকীয় জগতে। তাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে তার মা। বুদ্ধি দিয়ে বারবার ফিউরিওসাও বাঁচতে চায়। এক সময় লুটেরা বাহিনীর কাছ থেকে সে মায়ের সঙ্গে পালায়। কিন্তু বেশিদূর যেতে পারে না। মা তাকে পালিয়ে যেতে বললেও সে মায়ের কাছ থেকে কোথাও যাবে না। বন্দি হয়ে যায় ফিউরিওসা।

কৈশোর থেকে তারুণ্যে পা দেওয়া মেয়েটির রুদ্ধশ্বাস সংগ্রামের কাহিনি নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘ফিউরিওসা: আ ম্যাড ম্যাক্স সাগা’। এ সিনেমায় তরুণী ফিউরিওসা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আমেরিকান তারকা আনিয়া টেলর-জয়। চরিত্রটি হয়তো তাঁর জন্যই অপেক্ষা করছিল। সিনেমায় তাঁর সংলাপ প্রক্ষেপণ, বন্দুক চালনা থেকে শুরু করে চোখের ভাষা– সবই এককথায় অসাধারণ।

১৯৯৬ সালের ১৬ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের  মিয়ামিতে জন্ম নেওয়া এ অভিনেত্রী ছয় বছর বয়স পর্যন্ত মা-বাবার সঙ্গে বুয়েনস এইরেসে থাকতেন। পরে তাঁর পরিবার লন্ডনে স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু লন্ডনের জীবন আনিয়া মানিয়ে নিতে পারেন না।

এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, “যখন আমরা মিয়ামি থেকে লন্ডনে চলে আসি, সেই সময় মানিয়ে নিতে পারছিলাম না। কারও সঙ্গে কথা বলতে পারতাম না। সারাক্ষণ মন খারাপ থাকত। ভাবতাম, এই বুঝি বাবা-মা ফিরে যাবেন। সেই সময় প্রায়ই স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে ঝামেলা হতো। এক সময় পালানোর সিদ্ধান্ত নিই। আমার বয়স যখন ১৪ বছর, সেই সময় লন্ডন থেকে পালিয়ে চলে আসি নিউইয়র্কে। চলে আমার সংগ্রাম। ঠিক যেন আমার অভিনীত ‘দ্য কুইন্স গ্যাম্বিট’-এর চরিত্র বেথ হারমনের মতো।”

নিউইয়র্কে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলতে গিয়ে ‘ডুন-২’ অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমি ১৪ বছর বয়সে নিউইয়র্কে পালিয়ে আসি। স্কুলে আমার খুব খারাপ সময় কাটছিল এবং আমি একজন অভিনেত্রী হতে চেয়েছি। সুতরাং, আমাকে একজন পরিচালকের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। এভাবেই একদিন আমার স্বপ্নের দেখা পাই।’

শুরুতে আনিয়া অভিনয় করেন টেলিভিশনে ছোট ছোট কয়েকটি চরিত্রে। এরপর ২০১৫ সালে তিনি সুযোগ পান হরর সিনেমা ‘দ্য উইচ’-এর অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের। এরপর একে একে অভিনয় করেন ‘স্প্লিট’, ব্ল্যাক কমেডি ‘থরোব্রেডস’, ‘গ্লাস’। ২০২০ সালে টেলিভিশনের পিরিয়ড ড্রামা ‘এমা’য় এমা উডহাউসের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য গোল্ডেন গ্লোব মনোনয়ন পান।

এরপর আর তাঁকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। একই বছর আনিয়া নেটফ্লিক্স মিনি সিরিজ ‘দ্য কুইন্স গ্যাম্বিট’-এ বেথ হারমন চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান। চরিত্রটি তাঁকে এনে দেয় সেরা অভিনেত্রী হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব এবং স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড সম্মাননা। গেল সপ্তাহে মুক্তি পায় এ অভিনেত্রীর ‘ফিউরিওসা: আ ম্যাড ম্যাক্স সাগা’।

এ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো এমন একটি গল্পে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। অনেক পরিশ্রম করে কাজটি করেছি। দর্শকরা এখন দেখছেন, বাহবা দিচ্ছেন। ভালো লাগছে।’

‘ফিউরিওসা: আ ম্যাড ম্যাক্স সাগা’ আনিয়া টেলর-জয় একজন অভিনেত্রী হিসেবে এরই মধ্যে দারুণ প্রশংসা পাচ্ছেন। আশা করা যায়, ভবিষ্যতেও তাঁর এমন ধারাবাহিকতা থাকবে। তাইতো চলচ্চিত্র বোদ্ধারা বলছেন, আনিয়া হলিউডের আগামী দিনের উজ্জ্বল তারকা।

Scroll to Top