করোনাকালীন সময়ে শিরা এবং ডায়াবেটিস রোগীদের পায়ের ক্ষতের যত্নে যা করনীয়

করোনা বিশ্বব্যাপী এখন মহা দূর্যোগ চলছে। ছোট-বড়, ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবাই কোনো না কোনোভাবে এর কম-বেশি শিকার। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছেন রোগীরা, বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের অসুখে ভুগছেন এবং যারা অন্যের সাহায্য ছাড়া চলাফেরা করতে পারেন না। মানব শরীরের প্রায় সর্বাঙ্গে জটিলতা সৃষ্টিকারী এক রোগের নাম ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস, হাইপ্রেসার, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখা, রক্তের চর্বি কমানো, কিডনি রোগ ইত্যাদির যে সকল ওষুধ আপনি নিয়মিত খেতেন, তা চালিয়ে যেতে হবে। আপনার ডায়াবেটিস থাকলে বছরের যেকোনো সময় পায়ের যত্ন নেয়া গুরুত্বপূর্ণ

সব সময়ে শুয়ে-বসে না থেকে বাসার ভেতরেই যতটুকু হাঁটাহাঁটি করা সম্ভব, ততটুকু হাঁটবেন। ধূমপান বা তামাক খাওয়ার অভ্যাস থাকলে অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে। পরিমিত আহার করবেন, পূর্বের মতোই।

যাদের পায়ে ক্ষত বা ঘা আছে তাদের নিয়মিত ড্রেসিং করা উচিৎ, নতুবা ইনফেকশন বেড়ে যেতে পারে। একটি ছোট বালতি বা গামলায় হালকা গরম পানি নিয়ে ৮-১০ চামচ বিটাডিন ভায়োডিন, পভিসেপ সলিউশন মিশিয়ে ১০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখবেন। এরপরে পা উঠিয়ে ঘা এর উপর জীবাণুমুক্ত গজ দিয়ে হালকা করে কিছুক্ষণ ঘষবেন। সবশেষে আরেকটি শুকনা জীবাণুমুক্ত গজ দিয়ে পা মুছে ঘা এর উপরে ব্যাকট্রোসিন/ নেবানল অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে নিবেন।

যাদের পায়ে শিরার রোগ আছে তাদের রাতে শোবার সময়ে পায়ের নিচে বালিশ বা অন্য কিছু দিয়ে শোওয়া উচিত, যাতে পা শরীরের তুলনায় সামান্য উঁচুতে থাকে।

ভেরিকোস ভেইনের রোগীরা দীর্ঘ সময় একটানা দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন না, এতে পায়ে রস জমে পা ফুলে যেতে পারে। কারো কারো পায়ের মাংশপেশীতে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে।

ডায়াবেটিক রোগীদের সঠিক ধরনের জুতা পরিধান করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিসের কারনে রোগীদের পায়ের সরু রক্তনালীগুলোতে রক্ত চলাচলের সমস্যা থাকে। ফলে কোন কারনে যদি পায়ে, বিশেষ করে পায়ের আঙ্গুলে আঘাত লাগে, কেটে যায় বা ছিলে যায়; সেই ক্ষত সহজে শুকাতে চায় না। সেজন্য রোগীদের নরম সোলের জুতা পরা উচিত।

রোগীর পায়ের ক্ষত দ্রুত সারানোর জন্য পরিমিত সুষম খাদ্য, বিশেষ করে প্রোটিন, ভিটামিন সি ও জিংক সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি। কাগজী লেবু, আমলকি, কাঁচা টমেটো, কমলা, পেয়ারা, কাজু বাদাম, সিমের বিচি, কুমড়া প্রভৃতি খাবার দ্রুত ক্ষতস্থান পূরণে সহায়তা করে। এছাড়াও ট্যাবলেট জিংক-বি প্রতিদিন দুই বেলা করে খেতে পারেন। পরিশেষে, বর্তমান পরিস্থিতিতে আপনার চিকিৎসকের সাথে নির্দ্বিধায় মোবাইল ফোন বা যেকোন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরামর্শ করতে পারেন।