সকালের নাশতায় বা দিনের অন্যান্য সময় হালকা নাশতায় অনেকেই রুটি রাখেন। এই রুটি আবার কারও গমের আটার পছন্দের, আবার কারও জোয়ারের রুটি পছন্দ। দুটিই প্রাচীনকালের শক্তির উৎস হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গমের রুটি আরামদায়ক, নরম ও বেশ পরিচিত খাবার। আবার জোয়ার বা সোরঘামের রুটিতে কিছুটা মাটির ঘ্রাণ থাকে। অতিরিক্ত ফাইবার ও খনিজ উপাদান থাকে জোয়ারের রুটিতে। পছন্দ অনুযায়ী কেউ গমের রুটি খান, আবার কেউ জোয়ারের রুটি বেছে নেন। কিন্তু কোন রুটি কার জন্য ভালো, তা জানা নেই আমাদের। এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম। তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
গমের রুটির স্বাদ ও পুষ্টিগুণ:
গম থেকে আটা তৈরি হয়, তা দিয়েই তৈরি হয় রুটি। এটি সাধারণত গ্লুটেনযুক্ত ও সহজপ্রাচ্য শস্য। এতে মাঝারি গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI 60–70) থাকে, অর্থাৎ, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা ধীর গতিতে বাড়ায় এবং তা দীর্ঘ সময় বজায় রাখে।
উপকারিতা:
গমের রুটি খাওয়া হলে তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করে এবং যা দীর্ঘস্থায়ী পেট ভরিয়ে রাখে। অধিকাংশ সময় তরকারি বা ডালের সঙ্গে খাওয়ার উপযোগ্য গমের রুটি। তবে গ্লুটেন সেনসিটিভিটি থাকলে এই রুটি না খাওয়াই ভালো। এতে সমস্যা হতে পারে।
জোয়ারের রুটির বিশেষত্ব:
জোয়ার হচ্ছে একটি গ্লুটেনমুক্ত প্রাকৃতিক শস্য। যা সোরঘাম নামেও বেশ পরিচিত। ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে জোয়ারে। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাত্র ৫০, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক।
উপকারিতা:
গ্লুটেনমুক্ত: গ্লুটেনে অনেকেরই সমস্যা রয়েছে। তাই তাদের জন্য জোয়ারের রুটি উপযুক্ত।
ফাইবারসমৃদ্ধ: জোয়ারের রুটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে।
হজমে সহায়ক: অন্ত্র ভালো ও পরিষ্কার রাখে।
দে ও প্রয়োগে পার্থক্য:
গমের রুটি নরম, তুলতুলে ও সহজেই বানানো যায়। ভাজার সময় তাওয়ায় বেশ সুন্দরভাবে ফুলে উঠে। কিন্তু জোয়ারের রুটি কিছুটা শক্ত এবং এ কারণে তা ভেঙে যায়। তৈরির করার জন্য অভ্যাসও প্রয়োজন। তবে এটি হালকা, পরিপূর্ণ ও সুষম খাবারের অংশ হিসেবে দুর্দান্ত কাজ করে।
কোনটি কখন খাবেন:
ব্যস্ত দিনে সকালের নাশতায় গমের রুটি তৈরি করা সহজ। এ জন্য সময় কম থাকলে গমের রুটি খেতে পারেন। আর গ্রীষ্মকালে বা হজমের জন্য জোয়ার রুটি খেতে পারেন। এটি শরীর ঠান্ডা রাখবে। আবার যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন বা ওজন কমাতে চান, তারাও নিয়মিত জোয়ারের রুটি খেতে পারেন। তবে যারা নতুন কিছু ট্রাই করতে চান, তারা সময় থাকলে গম ও জোয়ার মিশিয়ে হাইব্রিড রুটি তৈরি করতে পারেন।
পরামর্শ:
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বৈচিত্র্য থাকা ভালো। গম ও জোয়ারের রুটি একদিন পরপর খাওয়া বা একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া উপকারী। দুটিই বেশ ভালো। শরীরের চাহিদা, রুচি ও হজমশক্তির ওপর নির্ভর করে নির্বাচন করুন, কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত বা উপকারী।







