মালয়েশিয়ায় দুই শতাধিক বাংলাদেশিসহ ৫৬১ অভিবাসী আটক

মালয়েশিয়ার বিশেষ অভিযানে ২০৫ বাংলাদেশীসহ ৫৬১ জন অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। আটককৃতরা বাংলাদেশ, মায়ানমার, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভারত, কম্বোডিয়া, সিয়েরা লিয়ন ও কামেরুনের নাগরিক।

গতকাল শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দেশটির বানডার তাসিক পাংচাপুরি বাইদুরি এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই অভিবাসীদের আটক করা হয়। জানা গেছে এই এলাকার জনসাধারণ অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে অভিযোগ করে। পরবর্তীতে তাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে এই অভিযান চালানো হয়।

আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে জনসাধারণের অভিযোগের পর মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন ৭৫২ জন ব্যক্তির কাগজপত্র খতিয়ে দেখে। এরপর আটক করা হয় ৫৬১ জনকে।

অভিযানের পর এক বিবৃতিতে দাতো\’ রুসলিন বিন জুসোহ বলেন, \’এখানকার এপার্টমেন্টগুলোর ৮০ শতাংশই বিদেশি কর্মীদের দখলে। যা স্থানীয়দের জন্য উদ্বেগ জনক। বিদেশিরা এখানে ৬০০ থেকে ৮০০ রিঙ্গিতের এপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়ে ৮ থেকে ১০ জন থাকছেন। স্থানীয়রা এই এলাকাকে \’মিনি ঢাকা\’ আখ্যা দিয়েছেন।\’ মূলত স্থানীয়দের অভিযোগেই এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অভিবাসন বিভাগের ডিজি বলেছেন, \’বিদেশিরা যখন লম্বা সময় এক জায়গায় থাকছেন তখন তারা ধীরে ধীরে নিজেদের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা শুরু করছেন, ওই এলাকাকে নিজেদের এলাকা হিসেবে পরিচিত করছেন যা আমরা সম্পূর্ণ নিরুৎসাহিত করছি।\’

ইমিগ্রেশনের বিভিন্ন পদমর্যাদার ৪৫৫ জন কর্মকর্তা এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। তাদের সহায়তা করেছিলেন জেনারেল মুভমেন্ট ফোর্স (পিজিএ) এর ৬০ জন কর্মকর্তা, জাতীয় নিবন্ধন বিভাগ (জেপিএন) এর ১২ জন কর্মকর্তা এবং মালয়েশিয়ার সিভিল ডিফেন্স ফোর্স (এপিএম) এর পাঁচজন সদস্য।

অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক (অপারেশন) তুয়ান জাফ্রি বিন এমবক তাহা, ইমিগ্রেশন উপ-পরিচালক (নিয়ন্ত্রণ) দাতু কেন আনাক লেবেন, প্রয়োগ বিভাগের পরিচালক তুয়ান মোহাম্মদ জাসমি বিন মোহাম্মদ জুয়াহির, সেল্যাঙ্গর রাজ্য ইমিগ্রেশন পরিচালক তুয়ান খায়রুল আমিনুস বিন কামারুদ্দিন এবং কুয়ালালামপুর ফেডারেল টেরিটরি ইমিগ্রেশন রাজ্য পরিচালক তুয়ান ওয়ান মোহাম্মদ সৌপি বিন ওয়ান ইউসুফ।

আটককৃতদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো হলো, কোনো পরিচয়পত্র না থাকা, অতিরিক্ত সময় অবস্থান করা এবং ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩ লঙ্ঘন করা। পরবর্তী তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের বুকিত জলিল ইমিগ্রেশন ডিপোতে রাখা হয়েছে।

অভিবাসন বিভাগের তথ্যমতে, নতুন বছরের ১৮ দিনে মালয়েশিয়া জুড়ে ৮৭০টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। আর এতে প্রাথমিকভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে ৯ হাজার ১৬৯ জন অভিবাসীর কাগজপত্র। অভিবাসন আইন ভঙ্গের অভিযোগে চূড়ান্তভাবে আটক দেখানো হয়েছে ৪ হাজার ২৬ জনকে। আর ৪২ জন মালিককেও শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।