ম্যাচ চলাকালে আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড়কে ধরতে মাঠের ভেতর স্বাস্থ্য কর্তারা, ম্যাচ স্থগিত

ব্রাজিলে এসে আর্জেন্টিনা দল অনুশীলন করেছে মাঠে খেলতে নেমেছে। আর খেলা চলাকালীন স্বাস্থ্য কর্তারা ঢুকে পড়লেন মাঠে। কারণ আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড় কোয়ারেন্টিন নিয়ম মানেনি। তাই বলে মাঠে ঢুকে পড়তে হবে খেলা শুরুর পরে? হ্যাঁ, এমনটাই হয়েছে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের আর্জেন্টিনা ব্রাজিল ম্যাচে।

ইংল্যান্ডে খেলেন বিধায় প্রয়োজনীয় কোয়ারেন্টিন-বিধি মানেননি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে এসে, যে কারণে আর্জেন্টিনার চার খেলোয়াড়কে ব্রাজিল থেকে বের করে দেওয়া হতে পারে, এমন খবর সারাদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাজিল কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। ওদিকে কনমেবল আর্জেন্টিনাকে আশ্বস্ত করে, খেলতে পারবেন অভিযুক্ত এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, জোভান্নি লো সেলসো, এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া ও ক্রিস্টিয়ান রোমেরো।

ব্রাজিলের জাতীয় স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধান এজেন্সির একাধিক কর্তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সদস্যদের নিয়ে সাত মিনিট যেতে না যেতেই হানা দেন মাঠে। হুট করে মাঠে ঢুকে পড়েন মার্তিনেজ, রোমেরো ও লো সেলসোকে আটক করার জন্য। খেলোয়াড় ও স্বাস্থ্য সংস্থার কর্তাদের মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছে।

বুয়েন্দিয়া বাদে বাকি তিনজনই ছিলেন আজ আর্জেন্টিনার মূল একাদশে। তিন দিন ধরে এদের ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না দেওয়া ব্রাজিলের স্বাস্থ্য কর্তারা ম্যাচ শুরুর সাত মিনিটের মাথায় মাঠে ঢুকে শুরু করলেন তুলকালাম! অভিযুক্ত চার খেলোয়াড়কে মাঠ থেকে নিয়ে যেতে চান তাঁরা! ফলে এখন আনুষ্ঠানিকভাবেই ম্যাচ স্থগিত।

কনমেবল জানিয়েছে, ম্যাচ আয়োজিত না হলে আর্জেন্টিনাকে তিন পয়েন্ট দেওয়া হবে। সাও পাওলোর স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছিল, ব্রাজিলের করোনার নিয়ম অনুযায়ী দেশটিতে ব্রাজিলীয়দের বাইরে যারা ব্রিটেন, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত থেকে সরাসরি প্রবেশের অনুমতি নেই। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে বিষয়টিতে ছাড় দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ব্রাজিলে প্রবেশের আগে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় ব্রাজিলে প্রবেশের পর ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন করতে হবে।

অ্যাস্টন ভিলা ও টটেনহামে খেলার কারণে এমিলিয়ানো মার্তিনেজ, ক্রিস্টিয়ান রোমেরো, এমিলিয়ানো বুয়েন্দিয়া ও জোভান্নি লো সেলসোর কেউই ১৪ দিনের এই কোয়ারেন্টিন পালন করেননি। তাঁরা ইংল্যান্ড থেকে প্রথমে পা রেখেছেন আর্জেন্টিনায়। সেখান থেকে তারা ভেনেজুয়েলায় ম্যাচ খেলে পা রেখেছেন ব্রাজিলে। আর্জেন্টিনা ও ভেনেজুয়েলায় যদি তাঁরা ১৪ দিন কাটিয়ে আসতেন তাহলে আর আইন তাঁদের আটকাতে পারত না বলেই জানিয়েছে সাও পাওলোর স্বাস্থ্য বিভাগ। এই নিয়েই গত দুদিন ধরে সংশয়ে ছিল আর্জেন্টিনা।

দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবলের শৃঙ্খলাবিধির ৭৪ নম্বর ধারায় স্পষ্টভাবেই উল্লেখ করা আছে, ম্যাচ শুরু হয়ে গেলে খেলা থামিয়ে খেলোয়াড়দের ম্যাচ খেলায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যাবে না। খেলতে বাধা দেওয়া যাবে না। খেলোয়াড় সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকলে সেটা মেটাতে হবে ম্যাচ শুরুর আগে বা পরে, ম্যাচ চলাকালীন সময়ে অবশ্যই নয়। এমনটি হলে যে দলের কারণে ম্যাচ থেমে যাবে, সে দল তিন পয়েন্ট হারাবে। প্রতিপক্ষ দল পাবে সেই তিন পয়েন্ট।

ঘটনা যাই ঘটুক সুবিধাজনক অবস্থানে আছে আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম এইরে দে সান্তা ফে’র সাংবাদিক আন্দ্রেস ইয়োসেন এই ব্যাপারটা তুলে ধরেছেন একটি টুইটে। যদিও এখনও পয়েন্ট দেওয়া নিয়ে কনমেবল আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে কনমেবল জানিয়েছে, ম্যাচ রেফারি ও কমিশনার এই ম্যাচের রিপোর্ট জমা দেবেন ফিফার শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটির কাছে। এরপর কী হবে না হবে সেটা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ফিফাই সিদ্ধান্ত নেবে। দেখা যাক ফিফার সিদ্ধান্ত কী হয়!

আর্জেন্টিনার কাছে তিন পয়েন্ট খোয়াবে ব্রাজিল