বাংলাদেশের মহিসোপান দাবিতে আবারো আপত্তি ভারতের

বঙ্গোপসাগরের মহিসোপানে ভারত বাংলাদেশের দাবির ওপর আপত্তি তুলেছে। অন্যদিকে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তির পর মহীসোপানের দাবি নিয়ে মিয়ানমার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের মহীসোপানের সীমানা নির্ধারণবিষয়ক কমিশনে (সিএলসিএস) এ অবস্থান নেই মিয়ানমার। তবে আপত্তি জানায়নি দেশটি।

বাংলাদেশের দাবি যেন কোনোভাবেই বিবেচনা করা না হয় এজন্য কমিশনকে ভারত অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশ প্রাপ্য মহিসোপান থেকে ভারত ও মিয়ানমার নিজেদের অংশ দাবি করছে। মহিসোপানের জটিলতা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না দুই প্রতিবেশীর বিরোধিতার কারণে।

গত ১৬ এপ্রিল ভারত জাতিসংঘের মহিসোপান নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিশনে বাংলাদেশের দাবির বিরোধিতা করে। তারা বাংলাদেশের দাবি বিবেচনায় না নেওয়ার জন্য কমিশনকে অনুরোধ করে। এর আগে জানুয়ারি মাসে মিয়ানমার বাংলাদেশের দাবির প্রতি তাদের পর্যবেক্ষণ দেয়। উল্লেখ্য, ২০১১ সালে মহিসোপানের দাবি জানিয়ে জাতিসংঘে আবেদন করে বাংলাদেশ, যাতে গত বছরের অক্টোবরে আবার সংশোধনী আনা হয়।

গত শুক্রবার জাতিসংঘের সিএলসিএস ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ভারতের আপত্তিপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ভূখন্ডের যে বেসলাইনের ওপর ভিত্তি করে মহিসোপান নির্ধারণ করেছে, সেটির মাধ্যমে ভারতের মহিসোপানের একটি অংশ দাবি করছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বঙ্গোপসাগরে যে ‘গ্রে এরিয়া’ রয়েছে সেটির বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো তথ্য দেয়নি। ’গ্রে এরিয়া’ হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে একটি ছোট অংশ যেখানের পানির মধ্যে যে সম্পদ রয়েছে, যেমন মাছ, সেটির মালিক ভারত; কিন্তু মাটির নিচে যে খনিজ পদার্থ আছে সেটির মালিক বাংলাদেশ। এ অংশের পরিমাণ প্রায় ৯০০ বর্গ কিলোমিটার।

এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সমুদ্র সংক্রান্ত আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ নিজ ভূখন্ডের বেসলাইন নির্ধারণ করেছে এবং এ সম্পর্কিত তথ্য জাতিসংঘে জমা দেওয়া হয়েছে। যদি তুলনা করা হয় তবে বাংলাদেশের থেকে ভারতীয় ভূখন্ডের বেসলাইন অনেক বেশি আগ্রাসী। গ্রে এরিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই ছোট অংশটি বঙ্গোপসাগরের যে ওয়াটার কলাম তার সঙ্গে সম্পর্কিত। এর সঙ্গে মহিসোপানের দাবির কোনো সম্পর্ক নেই। স্বাভাবিকভাবেই এটি মহিসোপানের দাবি বিবেচনার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা উভয় দেশ যে কাগজ জমা দিয়েছে সেটি দেখেছি। মিয়ানমারের পর্যবেক্ষণের জবাব আমরা শিগগিরই জমা দেব জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু ভারত মাত্র তাদের আপত্তি জমা দিয়েছে, আমরা এটি স্টাডি করে এর জবাব প্রস্তুত করব।’