বাংলাকে এগিয়ে নিতে শপথ নিলো তৃণমূল নেত্রী মমতার মন্ত্রিসভা

দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম এবং বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্র ভারতে পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গত ৫ মে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নিজের টিম সাজিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ৪৩ জনের মন্ত্রিসভার তালিকায় ১৭ জন নতুন মুখের পাশাপাশি পুরনোদের ওপরেই বেশি ভরসা রেখেছেন নেত্রী। ২০টি জেলার একজন করে প্রতিনিধি আছেন মমতার মন্ত্রিসভায়।

সোমবার (১০ মে) মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয় রাজভবনের থ্রোন রুমে। সেখানে ২৪ জন পূর্ণমন্ত্রী এবং ১০ জন স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও নয় জন প্রতিমন্ত্রীকে এদিন সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকাড়। তবে ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম অমিত মিত্র অসুস্থতার কারণে এবং ব্রাত্য বসু এবং রথীন ঘোষ করোনার কারণে ভার্চুয়ালি শপথ নিলেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এবারের মন্ত্রিসভায় মমতাসহ নয় জন নারী এবং সাত জন সংখ্যালঘু মন্ত্রিসভায় এসেছেন। করোনার কারণে শপথ অনুষ্ঠানে অনাড়ম্বরভাবে করা হয়নি।
\"Momota-Cabinet\"

নবান্নে গিয়ে কেবিনেট বৈঠক করে মন্ত্রীদের দপ্তরের দায়িত্ব তুলে দেবেন মমতা। এর ফলে কে কোনো দপ্তর পাচ্ছেন তা এখনও জানা যায়নি।

সূত্রে জানা যায়, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য দপ্তর ফের নিজের হাতেই রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের ভোটে প্রার্থী না হলেও ফের অর্থমন্ত্রী হচ্ছেন অমিত মিত্রই। আগামী ছয় মাসের মধ্যে তাকেও কোনো কেন্দ্র থেকে জিতিয়ে আনা হবে।
এর পাশাপাশি বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ওপর ভরসা রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সরকারের প্রথম দুটি ইনিংসে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সামলেছেন গ্রাম উন্নয়নে পঞ্চায়েতের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর। এবারও মন্ত্রিসভায় তাকেই সেই দপ্তর দেওয়া হতে পারে। রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, দলের মহাসচিব পদে যেমন তিনি দায়িত্ব পালন করছেন তেমন একইসঙ্গে গত ১০ বছরে শিক্ষামন্ত্রীসহ একাধিক দপ্তর সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তাই পূর্ণমন্ত্রী পদে নেত্রী ভরসা রেখেছেন তার ওপর।

এছাড়া শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, মলয় ঘটক, ব্রাত্য বসু, জ্যোতি প্রিয় মল্লিক, সৌমেন মহাপাত্র, চন্দ্রনাথ সিংহ, জাভেদ আহমেদ খান, স্বপন দেবনাথ, শশী পাঁজা, মানস ভুঁইয়া, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীও স্থান পেয়েছেন পূর্ণমন্ত্রী পদে।

পূর্ণমন্ত্রীদের তালিকায় নতুনদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের দীর্ঘদিনের বিধায়ক বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা, হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায়, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হরিরামপুরের বিধায়ক বিপ্লব মিত্র, উত্তর ২৪ পরগণার মধ্যমগ্রামের বিধায়ক রথীন ঘোষকে মন্ত্রিসভায় আনা হয়েছে।

এছাড়াও স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীদের তালিকায় রয়েছেন একাধিক সাবেক মন্ত্রিসভার মুখ। তাদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য, সুজিত বসু, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল সেন, সন্ধ্যারানি টুডু, সুব্রত সাহা, বেচারাম মান্না। নতুনদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, সাবেক আইপিএস কর্তা হুমায়ুন কবীর, বিধায়ক অখিল গিরি, সাবেক বিধায়ক রত্না দে নাগ। এদিকে জলপাইগুড়ি জেলা থেকে তিনবারের বিধায়ক বুলু চিক বরাইকও স্থান পেয়েছেন মন্ত্রিসভায়।

নতুন মুখ হিসেবে শপথ নিলেন সাঁওতালি অভিনেত্রী বীরবাহা হাঁসদা, সাবেক ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি, দিলীপ মণ্ডল, আখরুজ্জামান, জ্যোৎস্না মান্ডি, শিউলি সাহা, প্রযোজক শ্রীকান্ত মাহাত। তবে এবারে মমতা যাদের ওপর ভরসা রাখতে পারলেন না তারা হলেন, গত সরকারের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস রায়, নির্মল মাঝি, গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, মন্টুরাম পাখিরা, জাকির হোসেন।

Scroll to Top