যে সকল কারনে পরকীয়ায় জড়ান পুরুষরা

পরকীয়া হল বিবাহিত কোন ব্যক্তির (নারী বা পুরুষ) স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির সাথে বিবাহোত্তর বা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্ক ও যৌন কর্মকান্ড। মানবসমাজে এটি লঘু বা গুরুভাবে নেতিবাচক হিসেবে গণ্য। পরকীয়া শব্দটি এখন অতিপরিচিত। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই অহরহ শোনা যায় পরকীয়ার ঘটনা।পরকীয়ার জন্য ভেঙে যাচ্ছে সংসার, খুন হচ্ছে সন্তান। তবে অনেকে জানতে চায় কেন এই পরকীয়া।পরকীয়ার জন্য দায়ী কোন বিষয়গুলো দায়ী। নাকি সম্পূর্ণ মনের ব্যাপার এটি।আসলে কী কারণে পরকীয়ার জড়ায় পুরুষ।

আসুন জেনে নেই কেন পরকীয়ার জড়ায় পুরুষ

পারিবারিক কলহঃ পারিবারিক কলহের কারণে অনেক সময় পুরুষ পরকীয়ায় জড়ায়। সংসারজীবন সব সময় মধুময় হয় না। ঝগড়া থেকে শুরু করে গায়ে হাত তোলার ঘটনা ঘটে। তাই স্ত্রীর সঙ্গে যখন সম্পর্কের অবনতি ঘটে তখন বেশির ভাগ পুরুষ অন্য জায়গায় আশ্রয় খোঁজে এবং পরকীয়ার জড়ায়।

একঘেয়ে সম্পর্কঃ পৃথিবীতে বেশির ভাগ মানুষই প্রেম বা বিয়ের সম্পর্ককে বেশিদিন আঁকড়ে ধরে রাখতে পারেন না। জীবনভর একই ছাদের নিচে থাকেন বটে, তবে সংসারের নিয়মে। সংসার নামক বন্দিজীবনে একটুখানি বৈচিত্র্যের ছোঁয়া পেতে অনেক পুরুষরা আকৃষ্ট হন অন্য নারীদের প্রতি।

অপূর্ণ প্রত্যাশাঃ সঙ্গীর কাছ থেকে অনেক কিছু প্রত্যাশা থাকে নারীর। অনেক আশা করে বিয়ে করেছেন, কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি। এমন ক্ষেত্রে পুরুষরা শুরু করেন নতুনের খোঁজ।

আকর্ষণ হারিয়ে ফেলাঃ অনেকেই নিজের সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। প্রতিদিন একই চেহারা, একই আচরণ মনে হতে থাকে। তাই অন্য নারীর দিকে নজর চলে যায়।

পুরনো অভ্যাসঃ বিয়ের আগেও অনেক স্ত্রীর অভ্যাস থাকে একসঙ্গে একাধিক সম্পর্ক বয়ে চলা। তাই স্ত্রী যতই উপযুক্ত হোক না কেন, দৃষ্টি গড়ায় নতুনের খোঁজে। পুরনো অভ্যাস তাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায়।

মনোদৈহিক ও সামাজিক কারণঃ মনোদৈহিক ও সামাজিক কারণে মানুষ পরকীয়ায় জড়ায়। প্রথমে আসে দৈহিক বিষয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যৌন সম্পর্কে অতৃপ্তি থেকে অনেকে এ সম্পর্কে জড়ায়। শারীরিক সম্পর্ক মানুষের একটি শারীরবৃত্তীয় চাহিদা। যদি স্বামী-স্ত্রীর যৌনজীবন দুর্বল হয়, তাহলে অপর ব্যক্তির প্রতি আসক্তি তৈরি হতে পারে।

ডিআরডিফোর জিনঃ কারো মধ্যে যদি ডিআরডিফোর জিনের উপস্থিতি বেশি হয়, তাদেরও পরকীয়া বা বাড়তি সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা থাকতে পারে।

মানসিক সমস্যাঃ মানসিক সমস্যার কারণেও মানুষ পরকীয়ায় জড়াতে পারে। যাদের মধ্যে বাইপোলার মুড ডিজঅর্ডার আছে, তাদের পরকীয়ার সম্পর্কে জড়ানোর প্রবণতা দেখা যায়। তারা কোনো কিছুর মধ্যে স্থিরতা খুঁজে পায় না।

সঙ্গীর উদাসীনতাঃ সঙ্গীর উদাসীনতা ও দূরত্বের কারণেও অনেক সময় মানুষ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে জানিয়ে তিনি বলেন, অনেক সময় স্বামী-স্ত্রী বাস্তবতার কারণে, কাজের কারণে হয়তো দূরে চলে যায়। তখন তাদের মধ্যে পরকীয়ার আগ্রহ বাড়ে।

পশ্চিমা সংস্কৃতিঃ অনেক সময় পশ্চিমা সংস্কৃতির ধাঁচ নিজেদের মধ্যে আনতে চায়, তখন পরকীয়া বাড়ে। এ ছাড়া স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব, দূরত্ব ইত্যাদির জন্যও অন্যের প্রতি আগ্রহ, আসক্তির ঘটনা ঘটে।

শখ থেকে পরকীয়াঃ অনেকে শখ থেকেও পরকীয়ায় জড়ায়। অন্য আরেকটি শরীর কেমন, একে জানার একটি আগ্রহ থাকে। অনেকে আবার ভাবে, ‘ওরা কি সুখী! এই মানুষটির সঙ্গে থাকতে পারলে হয়তো আমার অনেক সুখ লাগত।’ এ থেকেও অনেকে ওই ব্যক্তির প্রতি আগ্রহ অনুভব করে।

দূরত্ব ও শূন্যতাঃ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যখন শূন্যতা তৈরি হয়, তখন আরেকজন সেখানে প্রবেশ করে। হয়তো স্বামী বা স্ত্রীর আর আগের মতো করে কথা বলে না বা আদর করে না। যত্ন কম নেয়। এই বিষয়গুলোর কারণে অন্যের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়।

স্ত্রী দূরে গেলেঃ স্ত্রী দূরে থাকলেও এ সমস্যা হতে পারে। শুধু যৌনতায় অংশগ্রহণ নয়, কথাবার্তায়ও বিষয়টি থাকতে হয়। তখন যদি অন্য কেউ সেই কথাগুলো শোনায়, তাহলে তার প্রতি আগ্রহ কাজ করে।

সন্তান হওয়ার পরঃ সন্তান হওয়ার পর অনেক মেয়ে স্থূল হয়ে যায়। এতে স্ত্রীর প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে। আবার নারীর বেলায়ও অনেকে হয়তো খুব হ্যান্ডসাম ছেলে পছন্দ করে, যা হয়তো তার স্বামীর সঙ্গে মেলে না।

তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানসিক ও শারীরিক প্রয়োজন মেটানোর বিষয়টিই এখানে মুখ্য হয়। এসব ভাবনা ব্যক্তিকে পরকীয়ার প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে।

Scroll to Top