পিঁপড়ার যে দোয়ায় নেমেছিল বৃষ্টি

ইসতিসকা শব্দের অর্থ পানি বা বৃষ্টি প্রার্থনা করা। সালাতুল ইসতিসকা অর্থ বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ। শারিয়তের পরিভাষায় অনাবৃষ্টির সময় আল্লাহর রাসুলের সুন্নত অনুসরণ করে খোলা প্রান্তরে নামাজ ও দোয়ার মাধ্যমে বৃষ্টি প্রার্থনা করাকে সালাতুল ইসতিসকা বা ইসতিসকার নামাজ বলা হয়।

 

নবিজি (সা.) ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন বলে বেশ কয়েকটি শক্তিশালী সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনু যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একবার বৃষ্টির জন্য সবাইকে নিয়ে ঈদগাহে গেলেন এবং দুরাকাত নামাজ আদায় করলেন। উভয় রাকাতে উচ্চৈস্বরে কেরাত পড়লেন। এরপর তিনি কেবলামুখী হয়ে দুহাত উঠিয়ে দোয়া করলেন। কেবলামুখী হওয়ার সময় তিনি তার চাদর ঘুরিয়ে দিলেন। (সহিহ বুখারি: ১০২৫, সহিহ মুসলিম: ৮৯৪)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন অতি সাধারণ পোশাক পরিধান করে, বিনত-বিনম্র অবস্থায় আল্লাহর কাছে নিবেদন করতে করতে ইসতিসকার নামাজের জন্য বের হলেন। (সুনানে আবু দাউদ: ১১৬৫, সুনানে তিরমিজি: ৫৫৮)

পূর্ববর্তী নবীগণের মধ্যেও বৃষ্টির জন্য সম্মিলিত নামাজ ও দোয়ার প্রচলন ছিল। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, নবীদের মধ্যে একজন নবি ইসতিসকার (সালাত) আদায়ের জন্য লোকজন নিয়ে বের হয়েছিলেন। হঠাৎ তিনি একটি পিঁপড়া দেখতে পেলেন। পিঁপড়াটি তার দুটি পা আকাশের দিকে উঠিয়ে রেখেছে। (অর্থাৎ বৃষ্টির জন্য দোয়া করছে)। এ দৃশ্য দেখে আল্লাহর ওই নবি লোকদের বললেন, তোমরা ফিরে চলো। এ পিঁপড়াটির দোয়ার কারণে তোমাদের দোয়া কবুল হয়ে গেছে। (মুসনাদে আহমদ)

অর্থাৎ ওই পিঁপড়াটি বৃষ্টির জন্য দোয়া করেছে এবং তার দোয়া আল্লাহ কবুল করেছেন ফলে বৃষ্টির ফয়সালা হয়ে গেছে।

মুসনাদে আহমদের বর্ণনায় ওই নবির নাম ও পিঁপড়াটি কী দোয়া করেছিল তাও উল্লিখিত হয়েছে। আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমরা পিঁপড়া মেরো না। সুলাইমান (আ.) একদিন বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতে বের হয়ে দেখলেন এক পিঁপড়া দুই পা ওপরে ‍তুলে বলছে, হে আল্লাহ! আমি আপনার সৃষ্টিকুলের মধ্যে একটি সৃষ্টি। আমরা আপনার অনুগ্রহের মুখাপেক্ষী। হে আল্লাহ! আপনার গুনগাহগার বান্দাদের গুনাহের কারণে আমাদের শাস্তি দেবেন না। বৃষ্টি দান করুন যে বৃষ্টিতে গাছ উদগত হবে ও ফল ফলবে। এ দৃশ্য দেখে সুলাইমান (আ.) তার সাথে থাকা লোকদের বললেন, ফিরে চলো, অন্যদের দোয়াই তোমাদের জন্য যথেষ্ট হয়েছে, তোমাদের জন্য বৃষ্টির ফয়সালা হয়েছে। (দারাকুতনি)

 

 

Scroll to Top