মুম্বাই ছাড়লেন কঙ্গনা রানাওয়াত

শেষ পর্যন্ত মুম্বাই ছেড়ে চলে গেলেন ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। সোমবার সকালে মুম্বাইয়ের বাড়ি থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। বাড়ি থেকে বেরনোর পরই কঙ্গনার চারপাশে দেখা যায় নিরাপত্তার ঘেরাটোপ।

গত বুধবার মানালির বাড়ি থেকে দীর্ঘ ৬ মাস পর মুম্বাইতে আসেন কঙ্গনা। তবে নিজের কর্মভূমি মুম্বাই থেকে মাত্র ৬ দিন পরেই ফিরে যেতে হলো তাকে।

আজ সোমবার টুইটে নিজের বিদায় বার্তা জানিয়ে কঙ্গনা লেখেন, ‘মন ভারাক্রান্ত, মুম্বাই ছাড়ছি। এই কয়েকদিন ধরে যেভাবে আমাকে ভয় দেখানো হয়েছে-লাগাতার আক্রমণ এবং গালিগালাজ আমার দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়েছে। আমার অফিসের পর আমার বাড়িটাও ভেঙে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে, সারাক্ষণ অ্যালার্ট সিকিউরিটি-যারা অস্ত্র হাতে নিয়ে আমার চারিপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বলতে বাধ্য হচ্ছি, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সঙ্গে আমার তুলনা একদম সঠিক ছিল।’

কঙ্গনা মুম্বাইতে আসার পর শিবসেনা এবং মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে বিবাদ চরমে পৌঁছায় তার। অভিনেত্রীর পালি হিলের অফিস ভেঙে ফেলার পরই তার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

কঙ্গনার অফিস ভাঙলেও, তার মনোবল ভাঙা যাবে না বলে স্পষ্ট জানান অভিনেত্রী। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টে একাধিক ভিডিও শেয়ার করেন কঙ্গনা। যা নিয়ে মুম্বাই পুলিশের তরফে কঙ্গনার বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করা হয়। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে অপমানজনক মন্তব্য করার অভিযোগেই কঙ্গনার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় অভিযোগ।

এসবের পাশাপাশি মাদক চক্রের সঙ্গে কঙ্গনার যোগ রয়েছে কি না কিংবা তিনি কখনো মাদক নিয়েছেন কি না, সে বিষয়েও তদন্ত করা হবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছে মুম্বাই পুলিশ।

সমস্যার সূত্রপাত কঙ্গনার একটি টুইটকে কেন্দ্র করে। অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর কঙ্গনা লিখেছিলেন, ‘একজন বড় তারকা খুন হওয়ার পর আমি মাদকচক্র, সিনেমার মাফিয়া চক্র নিয়ে কথা বলেছি। আমি মুম্বাই পুলিশকে বিশ্বাস করি না, কারণ তারা সুশান্ত সিং রাজপুতের অভিযোগকে পাত্তা দেয়নি। সুশান্ত সকলকে বলতেন, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে, শেষ পর্যন্ত তাকে মেরেই ফেলা হলো! আমিও নিরাপদবোধ করছি না, তার মানে কি আমি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বা মুম্বাইকে ঘৃণা করি?’

কঙ্গনার এই মন্তব্যের জবাবে সঞ্জয় রাউত বেশ কড়া ভাষায় জানান, ‘আমাদের অনুরোধ, উনি (কঙ্গনা) যেন আর মুম্বাইয়ে না আসেন। এটা মুম্বাই পুলিশের অপমান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচিত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।’

রাজ্যসভার সাংসদ রাউতের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হুমকির অভিযোগ তুলে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘মুম্বাইকে কেন পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মতো মনে হচ্ছে? আমি ৯ সেপ্টেম্বর মুম্বাই আসব। কারও বাবার ক্ষমতা থাকলে আমাকে আটকে দেখাক!’ এর জবাবেই একটি সাক্ষাৎকারে কঙ্গনার বিরুদ্ধে অসাংবিধানিক শব্দ ব্যবহার করেন রাউত।

জবাবে কঙ্গনা ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘রাউতজি, আমি মুম্বাই পুলিশ বা আপনার সমালোচনা করলে, আপনি বলতে পারেন না আমি মহারাষ্ট্রের অপমান করছি। আপনারাই পুরো মহারাষ্ট্রের প্রতিনিধি নন!’

প্রসঙ্গত, অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব কঙ্গনা। বলিউডের মাদকচক্র, সিনেমার মাফিয়া চক্রসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।