খান আতা রাজাকার ছিলেন, প্রমাণ দিলেন বাচ্চু!

খ্যাতিমান অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক, সংগীত পরিচালক, গায়ক ও গীতিকার খান আতাউর রহমান। সম্প্রতি এই নির্মাতাকে রাজাকার বলে মন্তব্য করেন নাট্যজন ও মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। ইতোমধ্যে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতেই নিজের পক্ষে বয়ান পেশ করলেন নাট্যজন ও মুক্তিযোদ্ধা নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হল।

‘সম্প্রতি নিউইয়র্কে সংস্কৃতি কর্মীদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমার বক্তব্য শেষে এক প্রশ্ন উত্তরে কৃতি চলচ্চিত্র নির্মাতা, সংগীত পরিচালক ও অভিনেতা খান আতাউর রহমান সম্পর্কে আমার একটি উক্তিকে কেন্দ্র করে ফেসবুক ও অনলাইনে সংবাদ মাধ্যমে তর্ক-বিতর্ক চলছে। অহেতুক বিতর্ক নিরসনে আমার কথা পুনর্ব্যাক্ত করছি।

১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সরকার ড.নীলিমা ইব্রাহীম কে প্রধান করে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিলেন রেডিও টেলিভিশনে পাকিস্তানীদেপ্রচার কার্যে সহযোগীতা কারীদের সনাক্ত করার জন্য। ১৯৭২ -এর ১৩মে নীলিমা ইব্রাহীম কমিটি যে তালিকা সরকারকে পেশ করেন সে তালিকায় ৩৫ নম্বর নামটি খান আতাউর রহমানের।
একথা অনস্বীকার্য যে খান আতাউর রহমান একজন গুণী শিল্পী। তার সৃষ্টিশীলতা নিয়ে কোন প্রশ্ন নাই। মুক্তিযুদ্ধপূর্ব কালে তার চলচ্চিত্র সমূহ আমাদের ঋদ্দ্ব ও উজ্জিবীত করেছে । যেমন \”সোয়ে নাদীয়া জাগো পানি\” \”নবাব সিরাজদৌলা\” সহ অনেক চলচ্চিত্র। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তিনি পাকিস্তানের সমর্থক ছিলেন এবং তা তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে।

আবার আলতাফ মাহমুদ, জহির রায়হান, শহীদউল্লাহ কায়সারের মত শিল্পী সাহিত্যিকরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল্ন তাদের স্বীয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এবং শাহাদাত বরণ করেছেন। অনেকের মনে প্রশ্ন উদ্রেক হয়েছে যে ৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর অব্যহতিতে কেন আমি বা আমরা তাকে রক্ষা করেছিলাম।

কারণ খান আতাউর রহমান কোন প্রকার মানবতা বিরোধী কর্মে লিপ্ত ছিলেন না, যদিও পাকিস্তানীদের সমর্থনে রেডিও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান করেছেন। আর খান আতাউর রহমান একজন শিল্পী এবং ৯মাসে তার কর্ম সম্পর্কে আমরা অবহিত ছিলাম না। তাছাড়া আমরা এও ভেবেছি ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক অনেকে পাকিস্তানীদের পক্ষাবলম্বন করেছে। আমরা তা বিচারের এখতিয়ার রাখিনা।

আমার মূল বক্তব্যে নয়, এক প্রশ্নের উত্তরে ইতিহাসের দায় থেকে আমি খান আতাউর রহমান সম্পর্কে উক্তিটি করেছিলাম। সবশেষে আবারো বলছি খান আতাউর রহমান একজন সৃষ্টিশীল মানুষ কিন্তু ১৯৭১ সালে তিনি দেশ ও মানুষের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ব্যক্তিগত ভাবে আমার তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নাই শিল্পী হিসাবে তাঁর প্রশংসা করি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধকালে তার ভূমিকার সমালোচনা তো করতেই পারি।’

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ঘণ্টা, ১৬ অক্টোবর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি