প্রতিদিন পাউরুটি খেলে যা হয়

ব্রেকফাস্টে ব্রেড-বাটার! আর বিকালের স্ন্যাক্স অফিসের স্যান্ডউইচ। মাঝে কখনও তেল চ্যাপচ্যাপে পরটা, তো কখনও অন্য কোনও ফাস্ট ফুড। এই তো হল সারা দিনের খাবার রুটিন, যা শুধু আমাদের মৃত্যুর দিকে আমাদের ঠেলে দিচ্ছে না, সেই সঙ্গে অনেকাংশে পঙ্গুও বানাচ্ছে। বিশেষত হওয়াট ব্রেড বা গোদা বাংলায় যাকে আমরা পাউরুটি বলে থাকি, তা যে কত রকমভাবে আমাদের ক্ষতি করছে, সে বিষয়ে কারওই খেয়াল নেই।

গবেষণা বলছে উত্তর এবং পূর্ব ভারতে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১ জন সিলিয়াক ডিজিজ নামে একটি ভয়ঙ্কর অটোইমিউন ডিজিজে আক্রান্ত হচ্ছে শুধুমাত্র পাউরুটির কারণে। শুধু তাই নয়, আরও নানা ধরনের মারণ রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধছে এই খাবরটির কারণে। তাই তো চিকিৎসকেরা আর কাল বিলম্ব না করে যত শীঘ্র সম্ভব পাউরুটি থেকে দূরত্ব বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। আর যদি কেউ এমনটা না করেন, তাহলে কি কি রোগ হতে পারে জানেন?

১. শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়: অনেকই মনে করেন পাউরুটি বেশ স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এই ধরণা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ ময়দা বানানোর সময় এর শরীরে কোনও ধরনের পুষ্টিকর উপাদানই আর অবশিষ্ট থাকে না। ফলে পাউরুটি খেলে শরীরের তো কোনও উপকার হয়ই না, উল্টে ময়দা পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে, সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরে মারাত্মক ক্ষতি সাধনও করে থাকে। তাই এই খাবারটি থেকে দূরে থাকাটাই শ্রেয়!

২. রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে পাউরুটি শরীরে প্রবেশ করার পর হজম হতে সময় নেয়, কিন্তু যে মুহূর্তে হজম হয়, তখনই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ইনসুলিনের ক্ষরণও বেড়ে যায়। এমনটা দিনের পর দিন হতে থাকলে শরীরের অন্দরে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স তৈরি হয়ে যায়। ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই কারণেই তো যাদের পরিবারে এই মারণ রোগটির ইতিহাস রয়েছে, তাদের পাউরুটি থেকে শত হস্ত দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশিয়ানে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ ছিল, যারা হোল গ্রেন খাবার বেশি মাত্রায় খায়, তাদের শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কেনাও আশঙ্কাই থাকে না। কিন্তু এমনটা না করে যারা রিফাইন ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার বেশি মাত্রায় খেয়ে থাকেন, যেমন ধরুন পাঁউরুটি, তাদের শরীরে ডায়াবেটিস রোগ বাসা বাঁধার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৩. ওজন বৃদ্ধি পায়: গবেষণা বলছে পাউরুটি খাওয়ার পর শরীরে একদিকে যেমন শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়, তেমনি অন্যদিকে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণও বাড়তে শুরু করে। ফলে এমমনটা যদি কয়েক দিন ধরে চলতে থাকে, তাহলে ওজন বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে লেজুড় হয় কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগও।

৪. ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে: ২০১৫ সালে জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুসারে পাউরুটি এবং ডিপ্রেশনের মধ্যে গভীর যোগ রয়েছে। বিশেষত পোস্ট মেনোপজাল সময়ে মহিলাদের ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার পিছেন এই খাবরটি যে বিশেষ ভাবে দায়ি, সে বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই। তাই এবার থেকে ব্রেড-বাটার খাওাযার আগে একবার অন্তত ভেবে দেখবেন, খাবারের নামে বিষ খাচ্ছেন না তো!

৫. শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়: টানা ১২ সপ্তাহ ৩৬ জন মানুষের উপর গবেষণা চালিয়ে বিশেষজ্ঞরা লক্ষ করেছেন, নিয়মিত পাউরুটি বা ময়দা দিয়ে তৈরি কোনও খাবার খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে কোলেস্টরল আমাদের হার্টের জন্য় একেবারেই ভাল নয়। কারণ এই উপাদানটির পরিমাণ রক্তে বাড়তে থাকলে হার্ট অ্যাটাক সহ নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।  তথ্যসূত্রঃ বোল্ডস্কাই অবলম্বনে  

বাংলাদেশ সময় : ১৮৪২ ঘণ্টা, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭,
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/ডিএ