গত বছরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সিএনজি চালক সবুজকে (২২) গুলি করে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।
গত ২৭ নভেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাজহারুল ইসলাম। পেনাল কোডের ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১২০(খ) /৩০২/১০৯/১১৪/৩৪ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে এ চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
মামলার চার্জশিটে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, এজাহার নামীয় আসামি নুরনবী চৌধুরী শাওন, সাদেক খান, সলিমুল্লাহ সলু, সৈয়দ নূর ইসলাম রাস্টন, শেখ মোহাম্মদ খোকন, বজলুর রহমান, আজিজুল হক রানা, আব্দুস সাত্তার ভুইয়া, রিয়াজ মাহমুদ, মুহাম্মদ বদিউল আলম বদিউজ্জামান, ফুরকান হোসেন এবং শাহজাহান খানের বিরুদ্ধে ভিকটিম সবুজকে হত্যার পরিকল্পনা ও অপরাধ মূলক ষড়যন্ত্র, আর্থিক সহায়তা এবং আগ্নেয়াস্ত্রে সরবরাহ করে পরামর্শ প্রদানসহ সাবির্ক সহযোগীতার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এজাহার নামীয় আসামি আসিফ আহমেদ, তারেকুজ্জামান রাজীব, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি মাসুদুর রহমান বিপ্লব ও রাসেলের বিরুদ্ধে ভিকটিম সবুজকে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যাবহার করে গুলি করে হত্যা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমানিত হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে এজাহার নামীয় আসামি আনিসুর রহমান কাবুল, মারুফুল ইসলাম বিপ্লব, সেন্টু, মনির চৌধুরী, ফারুক খান অভি, আবুল কাশেম ওরপে কাশু, সেলিম, আইমান ওয়াসেফ ওরফে অমিক, মো. কামরুজ্জামান রুবেল ও মিলন হোসেনের বিরুদ্ধে লাঠি শোটা নিয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে আন্দোলনরত নিরস্ত্র শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতাদের উপর হামলা চালিয়ে ভিকটিম সবুজের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি সহযোগিতা করার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আল্লাহ করিম মসজিদের সামনে আন্দোলনকারীদের উপর দেশী অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গুলি বর্ষণ করে আসামিরা। এসময় মামলার ভিকটিম সিএনজি চালক সবুজ মসজিদের দিকে আসছিলেন। এসময় সবুজ আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়। এরপর তাকে শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ঘটনার দিন মারা যান।
এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর সবুজের ভাই মনির হোসেন মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলাটি তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২৭ নভেম্বর শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাজহারুল ইসলাম।
মামলার আসামিরা হলেন- ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন, সাবেক এমপি সাদেক খান, সাবেক কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ সলু, সৈয়দ নূর ইসলাম রাস্টন, শেখ মোহাম্মদ খোকন, আসিফ আহমেদ, তারেকুজ্জামান রাজীব, জাহাঙ্গীর কবির নানকের পিএস মাসুদুর রহমান বিপ্লব, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী নেতা আজিজুল হক রানা, আব্দুস সাত্তার ভুইয়া, মুহাম্মদ বদিউল আলম বদিউজ্জামান, ফুরকান হোসেন, শাহজাহান খান, আনিসুর রহমান কাবুল, মারুফুল ইসলাম বিপ্লব, সেন্টু, মনির চৌধুরী, ফারুক খান অভি, আবুল কাশেম ওরপে কাশু , সেলিম, আইমান ওয়াসেফ ওরফে অমিক, মো. কামরুজ্জামান রুবেল, মিলন হোসেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও ছাত্রলীগের মোহাম্মদপুর থানার সভাপতি রাসেল।







