munajat1

যে দোয়া পড়লে জান্নাত আবশ্যক হয়ে যায়

দোয়া আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে: ডাকা, আহ্বান করা ও চাওয়া। দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে চাওয়া প্রতিটি দোয়াই কবুল হয়। পৃথিবীতে কারও কাছে বার বার কিছু চাইলে সে অসন্তুষ্ট হয়; কিন্তু মহান আল্লাহর কাছে না চাইলে তিনি অসন্তুষ্ট হন। তাই আমাদের সবকিছু মহান আল্লাহর কাছে চাইতে হবে।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন: ‘তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে, তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে এবং লাঞ্ছিত হবে।’ ( সুরা মুমিনুন, আয়াত: ২)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে, আর বলে যে, আমি দোয়া করলাম, কিন্তু আমার দোয়া তো কবুল হলো না।’ (বুখারি: ৬৩৪০)

অপর হাদিসে আছে – হযরত জাবির (রা.) বলেন, ‘আমি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো ব্যক্তি মহান আল্লাহর কাছে কোনো কিছু প্রার্থনা করলে মহান আল্লাহ তাকে তা দান করেন, অথবা তদনুযায়ী তার থেকে কোনো অমঙ্গল প্রতিহত করেন, যতক্ষণ না সে কোনো পাপাচারে লিপ্ত হয় বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে।’ (তিরমিজি)

মহান আল্লাহ তার নবীজির মাধ্যমে বান্দাদের এমন কিছু দোয়া শিখিয়েছেন, যা খুব সহজে আমল করা যায়, অথচ এগুলোর ফজিলত অনেক বেশি। এগুলো এমনই দোয়া, যা পড়লে জান্নাত আবশ্যক হয়ে যায়।

হযরত আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করবে, তার জন্যে জান্নাত আবশ্যক হয়ে যাবে।

رَضيتُ بالله رَبّاً ، وبالإسلامِ ديناً ، وبمحمَدٍ نَبِيًّا وَّرَسولاً
উচ্চারণ: রাদিতু বিল্লাহি রাব্বাউ ওয়া বিল ইসলামি দ্বিনাউ ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যাও ওয়া রসুলা। অর্থ: আমি আল্লাহকে রব, ইসলামকে দীন এবং মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রসুল হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিয়েছি। (মুসলিম: ১৮৮৪)

হযরত মুনাইজির (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সকালে উপরোক্ত দোয়া পড়বে, তাকে হাতে ধরে জান্নাতে পৌঁছানোর জিম্মাদার আমি। (মুজামুল কাবির: ২০/৩৫৫; আত-তারগিব ওয়াত-তারহিব: ৯৭১)

সাওবান (রা.) নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্য থেকে বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় উপরোক্ত দোয়াটি পড়বে, তার হক হয়ে যায় যে, মহান আল্লাহ তার ওপর সন্তুষ্ট হবেন।’ (আল-আজকার: ২১৪)

অন্য হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল তিনবার এ দোয়া পড়বে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তাকে তার নেকি বাড়িয়ে সন্তুষ্ট করবেন।’ (তিরমিজি: ২/১৭৬)

আরেকটি দোয়ার কথা এসেছে হাদিসে। হযরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের আজান শুনে নিম্নোক্ত দোয়া পড়বে, তার গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।’ দোয়াটি হলো—

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا ، وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولًا ، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا
উচ্চারণ: আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, ওয়া আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রসুলুহু; রাদিতু বিল্লাহি রাব্বাউ ওয়া বিল ইসলামি দ্বিনাউ ওয়া বিমুহাম্মাদিন নাবিয়্যাও ওয়া রসুলা। অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক এবং তার কোনো শরিক নেই। মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রসুল। আমি আল্লাহকে রব, মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রসুল এবং ইসলামকে দীন হিসেবে সন্তুষ্টচিত্তে মেনে নিয়েছি।

Scroll to Top