রিয়ালের পর এবার বার্সেলোনার হার

‘সুসংবাদ’ নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন মেসিরা। বার্সা যখন মাঠে নামছে, তখন কাদিজের বিপক্ষে হেরেই গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। হেতাফের বিপক্ষে বার্সেলোনা জিতলেই উঠে যাবে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। কিন্তু বার্সেলোনা জিততে পারেনি। মাদ্রিদের আরেক প্রান্তের এই ক্লাব যেন নিশ্চিত করল, রিয়ালের হারের সুযোগটা যেন বার্সা নিতে না পারে। ১-০ গোলে জিতে জয়হীনতার বৃত্তেই বার্সাকে আটকে রাখল হেতাফে। গোল করেছেন হাইমে মাতা, পেনাল্টি থেকে।

ফ্রান্সের হয়ে হোক, কিংবা সাবেক ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদের হয়ে, আতোয়াঁ গ্রিজমান সাধারণ স্ট্রাইকারের একটু পেছনে সব সময়ই স্বাধীনভাবে খেলে গিয়েছেন। বলা যায়, ‘নাম্বার টেন’ হিসেবে খেলেছেন অনেকটা। এই ভূমিকায় খেলেই ফ্রান্স কিংবা সাবেক ক্লাবের হয়ে সফল ছিলেন এই ফরাসি তারকা। বার্সেলোনায় এসে মেসির কারণে যে ভূমিকাটা পাচ্ছেন না।

বার্সায় তাঁর ভূমিকা একজন রাইট উইঙ্গারের। উইঙ্গার হিসেবে খেলতে গ্রিজমান তেমনটা স্বচ্ছন্দ না হলেও, নতুন কোচ রোনাল্ড কোমান তাঁকে এই জায়গাতেই খেলিয়ে যাচ্ছেন। দুই-একদিন আগে ইনিয়ে-বিনিয়ে নিজের এ অস্বস্তির কথা তুলেছিলেন। বলেছিলেন, ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশমই তাঁকে ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারেন। গ্রিজমানের ইঙ্গিতটা এখানে স্পষ্টই—বার্সেলোনা তাঁকে হয়তো ঠিকমতো ব্যবহার করছে না।

ফ্রান্সের কোচ দেশম তাঁকে যতটা বোঝেন, বার্সার রোনাল্ড কোমান তেমনি নয়।এমন কথা বলার পরেও কোমান গতকাল তাঁকে রাইট উইংয়েই খেলালেন। স্ট্রাইকারের পেছনে মেসি না থাকলেও গ্রিজমানের জায়গা হয়নি সেখানে, ৪-২-৩-১ ছকে নাম্বার টেন ভূমিকায় খেলেছেন নতুন তারকা পেদ্রি। আর সমান সামনে মেসি।

ম্যাচের শুরু থেকেই বার্সাকে চাপে রেখেছিল হেতাফে। দশ মিনিটে সাবেক বার্সা লেফটব্যাক মার্কো কুকুরেয়ার এক ক্রসে ঠিকঠাক মাথা ঠেকাতে পারেননি দামিয়ান সুয়ারেস। ১৮ মিনিটে সার্বিয়ান মিডফিল্ডার নেমানিয়া মাকসিমোভিচ দুর্দান্ত একটা সুযোগ পেলেও সরাসরি মারেন বার্সা গোলরক্ষক নেতোর দিকে উদ্দেশ্য করে। বিশ মিনিটে দুর্দান্ত এক আক্রমণে আরেকটু হলেই এগিয়ে যাচ্ছিল বার্সা। নিয়মিত লেফটব্যাক জর্দি আলবা না থাকায় লেফটব্যাক হিসেবে এই ম্যাচেও খেলেছেন দলে নতুন আসা রাইটব্যাক সের্হিনিও দেস্ত। দেস্তের পাস থেকে বল নিয়ে দুর্দান্ত শট নেন মেসি, বারে লেগে বল ফিরে আসে।

২৯ মিনিটে মেসির নিখুঁত এক ক্রসে পা ঠেকাতে ব্যর্থ হলো ফরাসি সেন্টারব্যাক ক্লেমঁ লংলে। ৩১ মিনিটে আরেক সুযোগ পায় হেতাফে, স্ট্রাইকার হাইমে মাতার মাধ্যমে। গোল হয়নি। ৪২ মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রি-কিক পেলেও গোল পাননি মেসি। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৫ মিনিটে হেতাফের সেন্টারব্যাক জেনে দাকোনামকে ডি-বক্সে ফেলে দেন ডাচ মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। সেখান থেকে পাওয়া পেনাল্টিতে গোল করেন মাতা।

পরে বেশ কয়েকবার সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি কুতিনিও, মেসি, ফাতি রা। বরং আরেকটু হলে ৮৩ মিনিটে আরেকটা গোল খেয়ে বসছিলেন। কলম্বিয়ান স্ট্রাইকার কুচো এর্নান্দেসের একটা শট লাগে ক্রসবারে, আরেকটা শট মারেন বেশ ওপর দিয়ে। শেষ মুহূর্তে প্রতিপক্ষের কল্যাণে সমতায় এসেই যাচ্ছিল বার্সা। যোগ করা সময়ে দেস্তের ক্রস সামলাতে গিয়ে আরেকটু হলে বলকে নিজেদের জালে পাঠিয়ে দিচ্ছিলেন দাকোনাম। যেটা লাগে ক্রসবারে। আর তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায়, রিয়ালের পর এই রাতে বার্সাও ফিরছে হার নিয়েই।