আর্জেন্টিনা ছাড়া বিশ্বকাপ!

মেসির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে বিতর্ক চলছে। এটা চলবেও। কিন্তু তাই বলে তার ভক্তকুলকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। সেই ভক্তকুলের কী হবে, যদি আগামী বিশ্বকাপটাই খেলতে না পারেন মেসি!

অনেকেরই মতে, মেসি হতে পারেন ফুটবলের পঞ্চম রাজা (ডি স্টেফানো, পেলে, ইয়োহান ক্রুইফ আর জিকোর পর)। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন একটা বিশ্বকাপের শিরোপা। তিনটা বিশ্বকাপ খেলেছেন আর্জেন্টাইন এ তারকা। এর মধ্যে দুইটাতে (২০১০ ও ২০১৪) ছিলেন প্রধানতম তারকা। গতবার তো ফাইনালেও নিয়ে গিয়েছিলেন দলকে। কিন্তু বার বার ফাইনালে গিয়েও ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন। অভিমানে তাই অবসরেও গিয়েছিলেন। আর্জেন্টাইনরা তো বটেই সারা দুনিয়ার ফুটবল ভক্তরা কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমেই আবারও ফিরিয়েছেন মেসিকে। কিন্তু এই ফেরাটাই যে অর্থহীন হওয়ার পথে! বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব পাড়ি দিয়ে আর্জেন্টিনার চূড়ান্ত পর্বে স্থান করে নেওয়ার আশাটা এখন টিম টিমে আলোর মতো জ্বলছে। হাতে আছে আর মাত্র দুটি ম্যাচ। প্রতিপক্ষ পেরু এবং ইকুয়েডর। পেরুর বিপক্ষে জিতলেই নিশ্চিত হবে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব। কিন্তু এই ম্যাচ হেরে গেলে খেলতে হতে পারে মহাদেশীয় প্লে-অফ। সেক্ষেত্রে আর্জেন্টিনাকে লড়াই করতে হবে ওশেনিয়া অঞ্চলের বাছাই পর্ব চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। কম্বেল অঞ্চল থেকে বাছাই পর্ব পাড়ি দিয়েছেন কেবল ব্রাজিল। আরও তিনটি দল সরাসরি এবং একটি প্লে-অফ খেলে বাছাই পর্ব পাড়ি দিয়ে চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। পয়েন্ট তালিকায় ব্রাজিল ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে।

উরুগুয়ে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে। ২৬ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে কলম্বিয়া। চার ও পাঁচ নম্বরে থাকা পেরু ও আর্জেন্টিনার সংগ্রহ ২৪ পয়েন্ট করে। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় আর্জেন্টিনার উপরে আছে পেরু। অবশ্য পরের দুই ম্যাচে পেরুকে খেলতে হবে আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়ার বিপক্ষে। সুতরাং পেরুর জন্য চূড়ান্ত পর্বে খেলা কঠিনই। অন্যদিকে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে থাকা চিলিও উঠে আসতে পারে উপরের দিকে। তারা পরের দুই ম্যাচে ব্রাজিল ও ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে। আর্জেন্টিনার সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে। গত ম্যাচে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ড্র করে চূড়ান্ত পর্বে খেলার আশা আরও শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন মেসিরা।

আর্জেন্টিনা সর্বশেষ বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব পাড়ি দিতে পারেনি ১৯৭০ সালে। এরপর থেকেই তারা বিশ্বকাপে নিয়মিত। দীর্ঘ ৪৭ বছর পর কী তবে আলবেসিলেস্তরা চূড়ান্ত পর্ব খেলতে পারবে না! তাও লিওনেল মেসির যুগে! আর্জেন্টিনার অনুপস্থিতি কেবল ভক্তদের জন্যই নয়, বিশ্বকাপের মূল আসরের জন্যও হবে বেদনাদায়ক। মেসিকে উপলক্ষ করে যেসব বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসতো, তারা পিছুটান দিতে পারে। তাছাড়া ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সফল দুটি দেশ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। এদের কোনো একটিও যদি বিশ্বকাপ খেলতে না পারে তবে তা ফুটবলের জন্যই ক্ষতিকর। কিন্তু ফিফার এমন কোনো নিয়ম নেই যে সেরা দলগুলোকে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ এনে দিবে। এমনকি চ্যাম্পিয়ন দলকেও বাছাই পর্ব পাড়ি দিয়েই আসতে হয়। আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে না থাকলে ক্ষতি হবে অনেক। তবে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে যথাসময়ে, যথা নিয়মে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসডিএম