জম্মু কাশ্মীর থেকে উধাও ২০০ যুবক, আতঙ্কে ভারত

নেপাল ও চীনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেই নতুন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ভারতে। এবার কাশ্মীর নিয়ে নতুন চিন্তায় পড়েছে মোদি প্রশাসন।

দেশটির গোয়েন্দা সূত্রের খবর অনুযায়ী, জম্মু কাশ্মীর থেকে প্রায় ২০০ জন যুবক নিখোঁজ হয়েছে। এদের প্রত্যেকের কাছে পাকিস্তানি ভিসা রয়েছে বলে জানা গেছে।

এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই তৎপরতা শুরু হয়েছে। প্রশাসনের ধারণা জঙ্গি সংগঠনে নাম লেখানোর পরই এরা নিখোঁজ হয়েছে। পাকিস্তান এদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্যই মগজধোলাই করেছে। জম্মু কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছড়ানোর লক্ষ্যে এদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছে নয়াদিল্লি। ইতিমধ্যেই হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

২০১৭ সাল থেকে জম্মু কাশ্মীরের ৩৯৯ জন যুবককে ভিসা দিয়েছে পাকিস্তান হাই কমিশন। এর মধ্যে ২১৮ জনের পরিচয় জানা যায়নি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর অস্ত্র সরবরাহ, সেনা সম্পর্কিত তথ্য এদের থেকে জানতে চাইছে পাকিস্তান। প্রশিক্ষণের পর কাশ্মীরে ফেরত পাঠানো হবে এদের। এই যুবকরা কাশ্মীরে হামলা চালাতে পারে।

ভারত ক্রমাগত পাকিস্তান থেকে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঠেকিয়ে চলেছে। এই সব জঙ্গিদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ফিরে আসছে পাকিস্তানি ভিসা নিয়ে। ৫ এপ্রিল ৫ জঙ্গিকে হত্যা করে ভারতীয় সেনারা। এর মধ্যে ছিল আদিল হুসেন, উমর নাজির খান, সাজ্জাদ আহমেদ হুররা। এরা ২০১৮ সালে পাকিস্তান যায়, তাদের কাছে পাকিস্তান হাই কমিশনের দেওয়া ভিসা ছিল।

গত সপ্তাহেই ভারতের কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতে অবস্থিত পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মী সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে। কারণ পাকিস্তানেও ভারতীয় দূতাবাসের কর্মী সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান দূতাবাস জঙ্গি কার্যকলাপে প্রশ্রয় দিচ্ছে বলেও অভিযোগ ছিল ভারতের।

এদিকে, বৃহস্পতিবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে ২০১৯ সালে পাকিস্তান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কিছু পদক্ষেপ নিলেও, তা যথেষ্ট নয়। কারণ পাকিস্তান এখনও জঙ্গি সংগঠনের কাছে স্বর্গরাজ্য। বরাবরই ভারত পাকিস্তান আশ্রিত জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্তের কথা বলে এসেছে। এই মার্কিন রিপোর্ট সেই দাবিকেই সত্যায়িত করল বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানায়, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পুলওয়ামায় ভয়াবহ হামলার পরে কিছু পদক্ষেপ পাকিস্তান নেয় ঠিকই, কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় যৎসামান্য।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালেই পাকিস্তানকে দেওয়া আর্থিক অনুদান বন্ধ করে আমেরিকা। ২০১০ সালে পাকিস্তান এনহ্যান্সড পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট বা পেপা চুক্তির ভিত্তিতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আর্থিক অনুদান লাভ করত পাকিস্তান।

আমেরিকা জানিয়েছে, ভারতকে নিশানা করেছে আফগান তালিবানরা, তাদের সঙ্গে জড়িত হাক্কানি নেটওয়ার্ক, এমনকি পাকিস্তানের মাটিতে বেড়ে ওঠা ও আশ্রয় পাওয়া জঙ্গি সংগঠগুলো। লস্কর, জইশের মত সংগঠনগুলো পাকিস্তানি মদতপুষ্ট বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
: কলকাতা২৪