বাসে আগুন দিলে মেলে টাকা, ভিডিও যায় নেতাদের কাছে: র‍্যাব

গত ১৮ নভেম্বর মিরপুরের কালশীতে বসুমতী পরিবহনের একটি বাস পোড়ানো হয়। বাস পোড়ানোর ভিডিও করে সেই ভিডিও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয় স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে। আগুন দেওয়ার বিনিময়ে অগ্নিসংযোগকারীরা পান ৭ হাজার টাকা। বাস পোড়ানোর মূল হোতা এবং বাসে আগুন দেওয়া ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এসব তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, শীর্ষ নেতারা তাদের দিয়ে বাসে আগুন দেওয়ান। আগুন দেওয়ার পর নিজেদের গ্রুপের মধ্যে টাকা ভাগাভাগি করে নিতেন তারা। সেইসঙ্গে যানবাহনে আগুন দেওয়ার পরই ভিডিও ধারণ করে হোয়াটসঅ্যাপে শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠাতেন।

গ্রেফতার চারজন হলেন- আল মোহাম্মদ চাঁন (২৭), মো. সাগর (২৫), মো. আল আমিন রুবেল (২৯) ও মো. খোরশেদ আলম (৩৪)। তারা যুবদল নেতাকর্মী বলে র‌্যাব জানিয়েছে। মিরপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে দফায় দফায় হরতাল, অবরোধ করছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। এর মধ্যে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে ১৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে পরদিন একই সময় পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ টি যানবাহন পোড়ানোর তথ্য দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

র‌্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, গত ১৮ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে কালশী সড়কে ‘বসুমতি পরিবহণের’ একটি বাসে আগুন দেয় গ্রেফতার ব্যক্তিরা। পদ-পদবি না থাকলেও তারা স্থানীয় যুবদলের সঙ্গে জড়িত।

স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে মিরপুর ও পল্লবীর আশপাশের এলাকায় বাসে অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনা হয় জানিয়ে র‌্যাব কমান্ডার মঈন বলেন, সাগর ও রুবেলকে নিয়ে মিরপুর-১১, তালতলা নাভানা, কালশী রোড ও সিরামিক রোড এলাকায় যানবাহনে আগুন দেওয়ার জন্য রাতে রেকি করেন চাঁন।

সংবাদ সম্মেলনে আল মঈন বলেন, অন্য কেউ যাতে ঘটনার ছবি তুলে শীর্ষ নেতাদের কাছে পাঠিয়ে কৃতিত্ব নিতে না পারে, সেজন্য খোরশেদকে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও ধারণ করে পাঠাতে বলা হয়। আগুন দেওয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও চাঁন পান ১০ হাজার টাকা। এর মধ্যে সাগর ও আল আমিনকে ৭ হাজার টাকা দিয়ে বাকিটা নিজে নেন।

চাঁনের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানায় মাদক সংক্রান্ত একাধিক মামলা রয়েছে জানিয়ে র‌্যাব বলছে, দলের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ধারণ করে শীর্ষ নেতাদের পাঠাতেন তারা।

গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান খন্দকার আল মঈন।

 

Scroll to Top