অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যা, ২৩ বছর পর স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

যৌতুকের জন্য ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ২৩ বছর পর স্বামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তাকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৩০ জুন) এই রায় ঘোষণা করেন নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম কামাল হোসেন (৪৫)। তিনি বরগুনার বামনা উপজেলার উত্তর কাকচিড়া গ্রামের আব্দুল আজিজ হাওলাদারের ছেলে। বর্তমানে তিনি পলাতক।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে জাহানারা বেগমের সঙ্গে কামালের বিয়ে হয়। তাদের একটি কন্যাসন্তানও জন্ম নেয়। ২০০৩ সালে ফের অন্তঃসত্ত্বা হন জাহানারা। ২০০৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে কামাল ও তার পরিবারের সদস্যরা জাহানারাকে বাবার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় কামাল জাহানারার তলপেটে লাথি মারেন এবং পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। পরে স্বজনরা তাকে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ও নিহতের বাবা মোসলেম উদ্দিনে বলেন, ‌জামাই কামাল ২০০৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে ফোন দিয়ে আমাকে জানায়, জাহানারা খুব অসুস্থ। যে কোনো সময় জাহানারা মারা যেতে পারে। পরদিন তাদের বাড়ি গিয়ে দেখি, মেয়ের মরদেহ বাড়ির উঠানে। আমার মেয়ের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন ছিল।

বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি রনজুয়ারা সিপু গণমাধ্যমকে বলেন, বাদী ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্তে আটজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ সচেতন হলে (রায় পেতে) ২৩ বছর অতিবাহিত হতো না। বাদী এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন। তবে আসামি কামাল এখনো পলাতক।

Scroll to Top