ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ আজ

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে সব যেন এলোমেলো হয়ে গেছে বাংলাদেশের। মাঠের খেলায় একের পর এক লজ্জার হার। হতাশায় ভেঙে পড়ে টেস্ট অধিনায়কের ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য। ড্রেসিংরুমে অশান্তির গুঞ্জন। তার ওপর শুরু থেকেই চলছে ইনজুরির মিছিল, যে মিছিলে যোগ দিয়েছেন তামিম-মোস্তাফিজরা। তামিমের ফেরার আশা থাকলেও শেষ হয়ে গেছে মোস্তাফিজের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। সর্বশেষ শোনা গেছে মুশফিকের চোটে পড়ার কথা। পাশাপাশি আলোচনার বিষয় হিসেবে যুক্ত হয়েছে কোচের সঙ্গে তামিমের মনোমালিন্যের খবর। অবশ্য তামিম ও অধিনায়ক মাশরাফি দুজনই উড়িয়ে দিয়েছেন এমন খবরের সত্যতা। সবকিছু মিলিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচের আগেও ঠিক স্বস্তিতে নেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তাই আজ বেলা ২টায় পার্লের বোল্যান্ড পার্কে শুরু হতে যাওয়া দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ মাশরাফিদের।

প্রথম ম্যাচে দলের ব্যাটিংয়ে কথা বলেছে কেবল মুশফিকের ব্যাট। বাকিদের মধ্যে ত্রিশোর্ধ্ব রান এসেছে কেবল ইমরুল কায়েসের ব্যাট থেকে। অন্যরা ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম ফিরলে দল থেকে ছিটকে যেতে পারেন ইমরুল। সেক্ষেত্রে উইকেটরক্ষকের ভূমিকার কারণে টিকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে লিটন দাসের। এছাড়া দলে আর কোনো পরিবর্তন হওয়ার ইঙ্গিত নেই। অবশ্য মুশফিকের চোটের ব্যাপারেও এখনো চূড়ান্ত কিছু জানা না যাওয়ায় শঙ্কা আছে তাকে নিয়েও।

তবে ব্যাটিংয়ের চেয়েও বাংলাদেশের বড় দুশ্চিন্তার নাম বোলিং। পুরো সিরিজে নখদর্পহীনভাবে বোলিং করে গেছে বাংলাদেশের বোলাররা। এমনকি প্রথম ওয়ানডেতে ২৭৯ রানের লক্ষ্য দিয়ে একটি উইকেটও ফেলতে পারেননি রুবেল-তাসকিনরা। প্রশ্ন উঠেছে বোলারদের সক্ষমতার মান নিয়েও। এখন এ সবকিছুর একমাত্র উত্তর হতে পারে মাঠে ভালো কিছু করে দেখানো। তাতেই কেবল কিছুটা লজ্জা ঘোছাতে পারেন তারা। বোলিংয়ের এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে বোলিং কোচ কিংবদন্তি কোর্টনি ওয়ালসের সক্ষমতা নিয়েও। যদিও কোচকে একটুও দায় দিতে নারাজ তামিম ইকবাল।

দ্বিতীয় ওয়ানডে সামনে রেখে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তামিম বলেছেন, ‘কোর্টনি ওয়ালশ যে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন, সেটা বিরাট ব্যাপার। আমরা জানি, তিনি খেলোয়াড়ি জীবনে কী করেছেন। একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে তার সঙ্গে আমার কাজ করার সুযোগ হয় কম। তবে যতটুকু দেখি, বুঝি, তিনি তার দায়িত্ব ভালোভাবেই পালন করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, দিন শেষে কে কতটা সেটা কাজে লাগাচ্ছে। আমার কাছে দুনিয়ার সব পরিকল্পনা থাকতে পারে। যদি সেটা কাজে না লাগাই, তবে কাউকে দোষ দেয়ার পক্ষে আমি নই।’

এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকায় বোলারদের যে পারফরম্যান্স, সেটা তাদের প্রকৃত চিত্র নয় বলেও জানিয়েছেন তামিম, ‘সংবাদ সম্মেলন কিংবা অন্যান্য মিডিয়ায় বোলারদের নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। হওয়াটাই স্বাভাবিক। তারা ভালো খেলেনি। তবে ভুলে গেলে চলবে না, গত দুই বছরে আমাদের সাফল্যের পেছনে পেস বোলিংয়ের বড় অবদান আছে। মোস্তাফিজ ভারত সিরিজে বেশি আলোচিত ছিল। আমি মনে করি, তাসকিনও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে রুবেলের বোলিং— এসব আমরা যেন না ভুলে যাই। আমি পাঁচ-সাত ম্যাচ খারাপ করলে আমাকে নিয়েও কথা হবে। তবে গত পাঁচ-সাত বছর কী করেছি, সেটা যেমন মানুষ ভুলবে না, ওদের (বোলার) ব্যাপারটাও ভোলা উচিত নয়। কাল (আজ) অথবা পরের সিরিজে তারা ঘুরে দাঁড়াবে।’

এ সময় দু-একটা ম্যাচ দিয়ে বোলারদের বিবেচনা না করার অনুরোধও করেছেন তামিম। তারকা ব্যাটসম্যান এ নিয়ে বলেছেন, ‘সবাই তরুণ। এ সিরিজে যদি ভালো না করে, তবে শিক্ষা নিয়ে পরের সিরিজে ভালো করবে। ভালো করছে না বলে সংবাদমাধ্যম-খেলোয়াড় সবাই যদি ওদের দোষ দিই, তাহলে তারা ভালো করতে পারবে না। তাদের সমর্থন দিতে হবে আমাদের। ওদের ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য আছে

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, ১৮ অক্টোবর   ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এস